ট্রেন বাতিলে ভিড়ের মাসুল প্রতিদিনই গুনছেন যাত্রীরা

ট্রেনে যাতে যাত্রীরা স্বচ্ছন্দে উঠতে-নামতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে হাওড়া স্টেশনে প্ল্যাটফর্মের উচ্চতা বাড়ানোর কাজ চলছে গত কয়েক দিন ধরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৪৬
Share:

ট্রেনে যাতে যাত্রীরা স্বচ্ছন্দে উঠতে-নামতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে হাওড়া স্টেশনে প্ল্যাটফর্মের উচ্চতা বাড়ানোর কাজ চলছে গত কয়েক দিন ধরে। ওই কাজের জেরে রোজই বাতিল করতে হচ্ছে একাধিক লোকাল ট্রেন। এর ফলে ঠাসাঠাসি ভিড় হচ্ছে অন্য প্ল্যাটফর্মগুলিতে। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে গত মঙ্গলবার ভিড়ের চাপে স্টেশনেই অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় এক কলেজ ছাত্রের। কিন্তু তার পরেও ছবিটা বদলায়নি।

Advertisement

যাত্রীদের অভিযোগ, প্রায় প্রতি দিনই পাশাপাশি প্ল্যাটফর্মে অল্প সময়ের ব্যবধানে একাধিক ট্রেন দেওয়ায় সকলে হুড়োহুড়ি করে তাতে উঠতে যাচ্ছেন। একই সঙ্গে যাত্রীরা নামতে থাকায় ভিড়ের চাপে প্রতি মুহূর্তে পদপিষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। উপরন্তু যে সব প্ল্যাটফর্ম থেকে মূলত দূরপাল্লার ট্রেন ছাড়ে, সেখানে আগেভাগেই যাত্রীরা মালপত্র নিয়ে অপেক্ষা করায় আরও জটিল হচ্ছে পরিস্থিতি।

রেল সূত্রের খবর, গত ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে হাওড়া স্টেশনের পুরনো কমপ্লেক্সে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের উচ্চতা বাড়ানোর কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে দু’নম্বর প্ল্যাটফর্মে ওই কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মের উচ্চতা বাড়ানোর কাজ। ওই কাজ শেষ হওয়ার কথা ৭ তারিখ। এর জন্য হাওড়া থেকে ব্যান্ডেলের মধ্যে গড়ে ১০টি করে লোকাল ট্রেন রোজ বাতিল করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, ধাপে ধাপে ১, ৮, ৯, ১৪ ও ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মের উচ্চতা বাড়ানো হবে। ফলে আগামী কয়েক মাস চলতে পারে যাত্রীদের এই ভোগান্তি। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেল কর্তৃপক্ষ দ্রুত উদ্যোগী না হলে যে কোনও দিন বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। প্রসঙ্গত, সরস্বতী পুজোর দিনেও ২০টি ট্রেন বাতিল থাকায় চরম হয়রানি হয়েছিল যাত্রীদের।

Advertisement

রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, উচ্চতা বাড়ানোর কাজ করার জন্য এক-একটি প্ল্যাটফর্ম গড়ে ১৫ থেকে ২০ দিন পুরো বন্ধ রাখতে হচ্ছে। একটি প্ল্যাটফর্মে দিনে গড়ে ৪০-৪৫টি ট্রেন যাতায়াত করে। ফলে পুরনো কমপ্লেক্সের সব প্ল্যাটফর্মেই গড়ে ২০ থেকে ২৫ মিনিট অন্তর ট্রেন ঢোকা ও বেরোনো চলতে থাকে। এই অবস্থায় একটি প্ল্যাটফর্ম বন্ধ রাখলে ওই প্ল্যাটফর্মের জন্য নির্ধারিত ট্রেনগুলি অন্য প্ল্যাটফর্মে পাঠাতে হচ্ছে। এক দিকে কম গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন বাতিল করেও সুরাহা মিলছে না। আবার বেশি ট্রেন বাতিল করলেও ভিড় বাড়ছে যাত্রীদের। আরও অভিযোগ, প্ল্যাটফর্ম বদল হওয়ার খবর অনেক আগে থেকে জানানো হচ্ছে না। আচমকা বদলের জেরে ধাক্কা খাচ্ছে সময়ানুবর্তিতা।

পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থেই প্ল্যাটফর্মের উচ্চতা বৃদ্ধি জরুরি। তবে ভোগান্তি কমাতে দ্রুত কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে। ভিড় নিয়ন্ত্রণেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement