একসঙ্গে: সমাবেশে পৌঁছনোর জন্য লঞ্চে ওঠার হুড়োহুড়ি। রবিবার, হাওড়ায়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
ছুটির দিন হলেও ব্রিগেডের জেরে দুপুরের দিকে যানজটে ভুগল মধ্য কলকাতা। ওই সময়ে ওই এলাকায় গাড়ির লম্বা লাইন চোখে পড়েছে। যদিও পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে, বেলা সাড়ে ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত কিছুটা গাড়ির চাপ থাকলেও বাড়তি পুলিশকর্মী নামিয়ে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা গিয়েছে। সেই সঙ্গে এ দিন ব্রিগেড ঘিরে তেমন বড় ধরনের পথ দুর্ঘটনার খবর নেই বলেও পুলিশ জানিয়েছে। তবে এ বারই প্রথম, করোনার জেরে পাতাল-প্রবেশ থেকে বিরত থাকল ব্রিগেডমুখী জনতা।
কারণ, আনলক-পর্বে মেট্রো চালু হলেও স্মার্ট কার্ড ছাড়া তাতে চড়ার উপায় নেই। আগের মতো টোকেন ব্যবস্থা এখনও চালু করেননি মেট্রো কর্তৃপক্ষ। এর জেরেই ব্রিগেডমুখী জনতাকে মেট্রোর পরিবর্তে হয় বাস, নয়তো পায়ে হেঁটে ময়দানে যেতে হয়েছে। তবে শিয়ালদহ বা উল্টোডাঙায় নেমে মিছিল করে ব্রিগেডের দিকে যাওয়ার পুরনো রীতি দেখা গিয়েছে এ বছরেও। সেই সব মিছিলের জেরেই এ দিন মধ্য কলকাতায় যানজট বলে
পুলিশের দাবি।
ভুক্তভোগীদের যদিও দাবি, মিছিলের জেরে হাঁসফাঁস অবস্থা আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল রাস্তায় বাসের কম উপস্থিতি। সকাল থেকেই কম ছিল নানা রুটের সরকারি বাস। বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে যা আরও সমস্যা বাড়ায়। বিভিন্ন জায়গায় বাস ধরার লম্বা লাইন দেখা যায় যাত্রীদের। পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, শহরে মূলত বেহালা, বাটানগর, রুবি, হাওড়া, নাকতলা রুটে মিনিবাস চলে। এ দিন ওই সব রুটে বাসের সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মতো কম। গড়িয়ার বাসিন্দা সঞ্জয় ভট্টাচার্যের দাবি, হাওড়ায় ট্রেন ধরবেন বলে দুপুরেই বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। বাসে উঠলেও তা আটকে যায় ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলের কাছে। এসএসকেএম হাসপাতালে এক জনকে দেখতে যাওয়ার পথে একই সমস্যায় পড়েন উল্টোডাঙার শৌরিক বিশ্বাস। তাঁর দাবি, ‘‘ব্রিগেডের জেরে বাস পাব না। ট্যাক্সিতে যাওয়া সহজ হবে ভেবে ওই পথে গিয়েছিলাম। কিন্তু ট্যাক্সিও ধর্মতলা পর্যন্ত গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকল ৪৫ মিনিট। শেষে নিরুপায় হয়ে মেট্রো ধরতে হল।’’
ব্রিগেডের জেরে থমকে যায় ট্রামও। মিছিলে আটকে পড়ার ভয়ে বহু ট্রামই সন্ধ্যার আগে বেরোয়নি বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। ভিড় ছিল লঞ্চঘাটগুলিতেও। হাওড়া থেকে অসংখ্য মানুষ ওই পথে কলকাতায় এসেছেন।
রেল স্টেশনগুলিতে এ দিনের ভিড় কোথাও পথের ভোগান্তিকেও ছাপিয়ে গিয়েছে বলে অনেকের দাবি। এ দিন সন্ধ্যায় শিয়ালদহ স্টেশনে ঢোকার মুখে এক ব্যক্তি বললেন, ‘‘রবিবারেও নিস্তার নেই। একটাই দিন শান্তিতে ট্রেনে যাতায়াত করি। কিন্তু এ দিন এত ভিড় যে বসার জায়গাই পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না। বসতে পারলেও সারা রাস্তা সঙ্গী হবে টুম্পার প্যারোডি।’’