ফাইল চিত্র।
সংশয় বাড়ছে। করোনার এই দ্বিতীয় ঢেউয়ে একেবারে তলানিতে ঠেকতে পারে শহরের উড়ান পরিষেবা।
গত ফেব্রুয়ারি মাসেও যেখানে কলকাতা বিমানবন্দর দিয়ে গড়ে ৪০ হাজারের বেশি যাত্রী প্রতিদিন যাতায়াত করছিলেন, সেখানে সংখ্যাটা নেমে ২০ হাজারের কাছে চলে এসেছে বলে মঙ্গলবার জানিয়েছেন বিমানবন্দরের
অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য। এখন প্রায় প্রতিদিনই কমছে যাত্রী-সংখ্যা। ফলে, একের পর এক উড়ান কমিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে উড়ান সংস্থাগুলিও।
পরিসংখ্যান বলছে, সারা দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে সংক্রমণ সব চেয়ে বেশি। এই অবস্থায় কলকাতা থেকে অন্য শহরে সরাসরি উড়ে যেতে গেলে আগামী দিনে কোভিড নেগেটিভ সার্টিফিকেট সঙ্গে থাকা বাধ্যতামূলক
করতে পারে অন্যান্য রাজ্যের সরকার। ঠিক যেমন এখন কলকাতা থেকে মুম্বই বা ভুবনেশ্বরে যেতে গেলে কোভিড নেগেটিভ সার্টিফিকেট লাগছে। ঠিক যে ভাবে বেশ কিছু রাজ্য থেকে কলকাতায় আসার ক্ষেত্রেও এটা চালু হয়েছে।
আশঙ্কার কথা হল, কলকাতা তথা রাজ্যে যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে চাইলেই ২৪ বা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পরীক্ষা করিয়ে সার্টিফিকেট পাচ্ছেন না অনেকেই। বিভিন্ন ল্যাবরেটরিতে উপচে পড়ছে নমুনা। ফলে, এমনই আশঙ্কার মেঘ দেখা দিয়েছে যে, উড়ান ধরার আগে যদি সময় মতো সার্টিফিকেট হাতে না আসে, তা হলে টিকিট কাটা থাকলেও উড়তে পারবেন না যাত্রী।
সোমবার, ২৬ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে কর্নাটকে লকডাউন চালু হয়ে গিয়েছে। কলকাতা ও বেঙ্গালুরুর মধ্যে প্রচুর যাত্রী নিয়মিত যাতায়াত করেন। সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা। এমনিতেই কর্নাটক, কেরল, মহারাষ্ট্র ও তেলঙ্গানা থেকে কলকাতায় সরাসরি যাঁরা আসছেন, তাঁদের সঙ্গে এখন কোভিড নেগেটিভ সার্টিফিকেট আনাটা বাধ্যতামূলক করে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। নিয়ম অনুযায়ী, বিমানে ওঠার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ওই পরীক্ষা করিয়ে সার্টিফিকেট নিতে হবে। কিন্তু, সর্বত্র চাইলে সময় মতো সেই সার্টিফিকেট পাওয়া যাচ্ছে না। সেই কারণে, চাইলেও বিমানে চেপে কলকাতায় আসতে পারছেন না অনেকে। সড়কপথ ধরছেন তাঁরা।
সোমবার বেলা ১২টার পর থেকে তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন দিল্লি, গুজরাত, ছত্তীসগঢ়, উত্তরপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশ থেকে আসা যাত্রীরা। তাঁদেরও সঙ্গে কোভিড নেগেটিভ সার্টিফিকেট আনতে হচ্ছে। সেখানেও সার্টিফিকেট চাইলে সময়ে পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে, শুধু সার্টিফিকেটের অভাবেই অনেক যাত্রীকে কলকাতামুখী উড়ান বাতিল করতে হচ্ছে।
নাভিশ্বাস উঠেছে উড়ান সংস্থাগুলিরও। চেন্নাই থেকে সরাসরি উড়ানে কলকাতায় আসতে চাওয়া হাতে গোনা কয়েক জন যাত্রী পেয়ে শেষ মুহূর্তে সেই বিমানকে অন্য শহর ঘুরিয়ে, অন্য যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে আনা হয়েছে। একই ভাবে কলকাতা থেকে মুম্বই যাওয়ার জন্য হায়দরাবাদ ঘুরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বিমানকে।
উড়ান সংস্থাগুলির কর্তাদের দাবি, এ ভাবে চললে অচিরেই বসিয়ে দিতে হবে একের পর এক উড়ান। লোকসান করে উড়ান চালানো সম্ভব হবে না।