যাত্রীদের একটা বড় অংশও কলকাতা বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে মূলত দু’টি জনপ্রিয় অ্যাপ-ক্যাবেরই শরণ নিতেন। ফাইল চিত্র।
অ্যাপ-ক্যাবে অনেকটাই অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছেন শহরবাসী। অন্য শহর থেকে এ শহরে উড়ে আসা যাত্রীদের একটা বড় অংশও কলকাতা বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে মূলত দু’টি জনপ্রিয় অ্যাপ-ক্যাবেরই শরণ নিতেন। কিন্তু সম্প্রতি বিমানবন্দর থেকে গন্তব্যে যেতে যাত্রীদের অনেকেরই অভিজ্ঞতা মোটেই সুখবর নয়। মূলত অ্যাপ-ক্যাব পেতে গিয়ে রীতিমতো হয়রানির মুখে পড়ছেন তাঁরা। অভিযোগ, সেই সুযোগে যেমন খুশি ভাড়া হাঁকছে টার্মিনালের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িগুলিও।
অসমর্থিত সূত্রের দাবি, অ্যাপ-ক্যাবের মধ্যে ওলা এবং উবেরের সঙ্গে কলকাতা বিমানবন্দরে পার্কিং ফি সংক্রান্ত কোনও সমস্যা হয়েছে কর্তৃপক্ষের। বিমানবন্দরের অধিকর্তা সি পট্টাভি সেই সমস্যার কথা মেনে নিয়ে বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে আমাদের সঙ্গে ওলা-উবেরের চুক্তি নেই। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওই চুক্তি করা হবে।’’ যদিও বিমানবন্দরের একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, অনেক যাত্রী ও কর্মী মাঝেমধ্যে অ্যাপ-ক্যাব পাচ্ছেন। তবে সম্প্রতি দিল্লি থেকে শহরে নেমে পাইলট সুমন্ত্র রায়চৌধুরীর অভিজ্ঞতা অবশ্য অন্য রকমই। তাঁর কথায়, ‘‘চোখের সামনে ওলা-উবেরের গাড়ি ঘুরে বেড়াতে দেখছি, অথচ মোবাইলে বুক করতে গেলে নিচ্ছে না!’’ প্রি-পেইড-এ গাড়ি নেই, অন্যতম অ্যাপ-ক্যাব স্ন্যাপ চেয়েও পাননি তিনি।ফলে বিমানবন্দরের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা সাদা গাড়িতে কেষ্টপুর অবধি পৌঁছতে রীতিমতো নাজেহাল হতে হয়েছে তাঁকে। ওইটুকু পথের জন্য তাঁকে গুণতে হয়েছে হাজারটাকারও বেশি!
প্রায় একই অভিজ্ঞতা সল্টলেকের সাত্যকি নিয়োগীরও। তিনি বেঙ্গালুরু থেকে শহরে এসে বহু চেষ্টা করেও অ্যাপ-ক্যাব পাননি। তাঁর অসহায় অবস্থা দেখে এক সময়ে কয়েক জন যুবক এগিয়ে এসে জানান, সল্টলেকে পৌঁছে দিতে লাগবে ১২০০ টাকা! একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের বড়কর্তা রজত মেহতা সম্প্রতি বিমানবন্দরে নেমে বাইপাসের ধারে একটি হোটেলে যাওয়ার জন্য অ্যাপ-ক্যাব খুঁজছিলেন। কিন্তু বার চারেক অ্যাপ-ক্যাব বাতিল হওয়ার পরে তিনি সেখানে অপেক্ষারত সাদা গাড়ির চালকের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে দেখেন, ভাঙা হাঁকা হচ্ছে ইচ্ছামতো। শেষে বিমানবন্দরের বাইরে দাঁড়িয়ে প্রায় ৪৫ মিনিটের চেষ্টায় অবশেষে স্ন্যাপ-এর গাড়ি পান তিনি।
ত্রিদিবেশ বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়মিত কলকাতা বিমানবন্দর দিয়ে যাতায়াত করেন। সম্প্রতি বেশ কয়েক বার কলকাতায় নেমে তিনি হয়রান হওয়ার পরে এখন তাই এখন বাড়ির গাড়িই ডেকে নেন। তাঁর মতে, সাদা গাড়ি ভাড়া করার জন্য যে দালালেরা বিমানবন্দর চত্বরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, মূলত তাঁদের ‘দৌরাত্ম্যে’ই সেখানে বন্ধ হয়েছে অ্যাপ-ক্যাব পরিষেবা।