প্রতীকী ছবি।
অনলাইনে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে শহরের বিভিন্ন স্কুলে। ইতিমধ্যেই প্রথম থেকে নবম এবং একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের পরীক্ষার সূচি দিয়ে দিয়েছে বেশির ভাগ স্কুলই। মঙ্গলবার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির জন্য আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে স্কুল খোলার কথা জানালেও অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলে আসার অনুমতি এখনও মেলেনি। তাই অনলাইন পরীক্ষাই ভরসা ওই পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে। স্বচ্ছ ভাবে পরীক্ষা নেওয়া এবং ঠিক মূল্যায়ন করার জন্য তাই প্রযুক্তির দ্বারস্থ হচ্ছে শহরের অনেক স্কুল। কোনও স্কুলের আবার ভরসা অভিভাবকেরা।
সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণ দামানি জানান, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের স্কুলে আসার অনুমতি মেলায় তাদের পরীক্ষা অফলাইনে নেওয়া যেতে পারে। তবে বাকি সব শ্রেণির ক্ষেত্রে অনলাইনে পরীক্ষা নিলে পড়ুয়াদের অভিভাবকদের অনুরোধ করা হয়েছে, তাঁরা যেন পরীক্ষা চলাকালীন ছেলেমেয়েদের উপরে নজর রাখেন। অন্য দিকে, ক্যামেরা অন করে পরীক্ষার্থীদের উপরে নজরে রাখবেন শিক্ষকেরাও। কৃষ্ণ দামানি বলেন, ‘‘শুধু অনলাইন পরীক্ষার উপরেই এ বার চূড়ান্ত মূল্যায়ন হবে না। সারা বছর ধরে কুইজ় হয়েছে। নানা ধরনের অনলাইন মূল্যায়ন হয়েছে। চূড়ান্ত ফলাফলে এই সব বিবেচিত হবে।’’
শ্রী শিক্ষায়তনের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্য জানান, তাঁদের স্কুলে অনলাইন পরীক্ষাও এমন ভাবে নেওয়া হচ্ছে যাতে পরীক্ষার্থীরা কোনও ভাবেই বই দেখে লিখতে না পারে। তাঁদের স্কুলে একটি বিশেষ সফটওয়্যার আনা হয়েছে। সেই সফটওয়্যারই রীতিমতো গার্ডের ভূমিকা পালন করবে। ব্রততীদেবী বলেন, ‘‘এমনিতেও ভিডিয়ো অন করে পরীক্ষা দিতে বলা হয়। সেই সঙ্গে ওই বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে পরীক্ষা দিলে কোনও ভাবেই বই দেখে লেখা যাবে না। যে ঘরে বসে পরীক্ষার্থী লিখবে, সেই ঘরের পুরো অংশে নজরদারি চালানো যায় ওই সফটওয়্যারের মাধ্যমে। এর মধ্যে ওই সফটওয়্যারের মাধ্যমে পরীক্ষা হয়েছে। কয়েক জন বই দেখে লিখতে গিয়ে ধরাও পড়েছে।’’
আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের স্কুলে আসার অনুমতি মেলায় তাদের বার্ষিক পরীক্ষা স্কুলেই নেওয়া যাবে বলে মনে করছেন ডিপিএস উত্তর কলকাতার অধ্যক্ষা সুজাতা চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘আমরা সব সময়ে অফলাইন পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে। নবম, একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা স্কুলেই নেব। তবে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত যদি শুধু পরীক্ষার সময়ে স্কুলে আসার অনুমতি দেওয়া হয়, তা হলে খুব ভাল হয়। আমরা সেই অপেক্ষায় আছি।’’
ন্যাশনাল ইংলিশ স্কুলের অধ্যক্ষা মৌসুমী সাহা জানান, যে সব শ্রেণির পড়ুয়ারা এখনই স্কুলে আসার অনুমতি পায়নি, তাদের ল্যাপটপ বা মোবাইলের ক্যামেরা অন রেখে অনলাইনে পরীক্ষা দিতে বলা হবে। তিনি বলেন, ‘‘পরীক্ষার্থীদের বলা হয়েছে, বই দেখে লিখলে নিজেরাই ঠকবে।’’
রামমোহন মিশন হাই স্কুলের অধ্যক্ষ সুজয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই আমরা অফলাইনে পরীক্ষা নিতে ইচ্ছুক। স্বাস্থ্য-বিধি মেনে চলা হবে সে ক্ষেত্রে। পড়ুয়াদের অভিভাবকেরাও মনে করেন, অফলাইনে পরীক্ষাতেই মূল্যায়ন ঠিক হবে। অনুমতি পাওয়া গেলে খুব ভাল হয়।’’