নিজস্ব চিত্র।
ক্ষোভ থেকেই কি গুলি চালান কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা রক্ষী বাহিনী (সিআইএসএফ)-র জওয়ান অক্ষয়কুমার মিশ্র? এই প্রশ্নই ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। অমরনাথ যাত্রায় ডিউটিতে পাঠানো নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিলেন অক্ষয়। জেরায় এমন তথ্যই হাতে পেয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অমরনাথ যাত্রার ডিউটিতে যেতে রাজি ছিলেন না ওই জওয়ান। কিন্তু জোর করে তাঁকে পাঠানো হয়েছিল। অনিচ্ছা সত্ত্বেও অমরনাথে যান অক্ষয়। অমরনাথ যাওয়ার পাঁচ দিনের মাথায় অক্ষয়ের বাবার মৃত্যু হয়। এর পরই তিনি ফিরে আসেন। এই ঘটনায় ভেঙে পড়েছিলেন অক্ষয়। এ নিয়ে তাঁর মনে ক্ষোভ সঞ্চারিত হয় বলে মনে করা হচ্ছে।
পাশাপাশি ব্যারাকে বেশ কয়েক জনের উপর অক্ষয়ের রাগ ছিল বলেও প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। তাই রাগের বশেই এই কাণ্ড অক্ষয় ঘটিয়েছেন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
শনিবার সন্ধ্যায় ঘণ্টা দেড়েকের রুদ্ধশ্বাস অপারেশনের পর জাদুঘর চত্বরের অদূরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যারাক থেকে যখন অক্ষয়কে গ্রেফতার করে বার করা হচ্ছিল, তখন তাঁকে নির্লিপ্তই দেখাচ্ছিল। পুলিশের গাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময় সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের দিকে তাকিয়ে হাত নাড়তেও দেখা যায় ওড়িশার ঢেঙ্কানলের ওই জওয়ানকে।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ কিড স্ট্রিটে এমএলএ হস্টেলের উল্টো দিকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যারাকে গুলিচালনার ঘটনা ঘটে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর ওই ব্যারাকে হেড কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন অক্ষয়। তাঁর ছোড়া গুলিতে মৃত্যু হয়েছে রঞ্জিতকুমার সারেঙ্গি নামে কেন্দ্রীয় বাহিনীর এক জওয়ানের। গুলি চালানোর খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে যায় কলকাতা পুলিশের বিশাল বাহিনী। বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, কাঁদানে গ্যাস নিয়ে জাদুঘরের কাছে ওই ব্যারাকে যায় পুলিশের দল। ঘটনাস্থলে যান কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলও। সূত্রের খবর, অক্ষয়কে নিরস্ত্র করতে ওখানেই তাঁর ‘কাউন্সেলিং’ করা হয়। এর পর অক্ষয় নিজে থেকেই পুলিশের কাছে ধরা দেন। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে আটক করা হয় এবং পরে গ্রেফতার। ঘণ্টা খানেকের চেষ্টায় শেষমেশ পুলিশের কাছে ধরা দেন অক্ষয়। এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, এ নিয়ে তদন্ত চলছে। অক্ষয়কে হেফাজতে নিলে এ বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে জানা যাবে।