প্রতীকী ছবি।
ছয় নম্বর জাতীয় সড়কের ধারেই একটি বাড়ি। মাঝেমধ্যেই রাস্তার ধারে বসে থাকত সেই বাড়ির মালিক। বছর পঞ্চাশের ওই প্রৌঢ়ের পায়ে দগদগে ঘা। অন্যকে ভর করেই তাকে চলাফেরা করতে হয়। আপাতদৃষ্টিতে অসুস্থ ওই ব্যক্তিকে দেখলে সাধারণ মানুষ বা পথচারীদের বোঝার উপায় ছিল না, ওই প্রৌঢ় আসলে মাদকের কারবারি।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বুধবার রাতে অঙ্কুরহাটির ওই বাড়িতে হানা দেন হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দারা। তল্লাশি চালিয়ে বাড়ির ভিতর থেকে মেলে নিষিদ্ধ দুই ধরনের ওষুধ। বাজেয়াপ্ত করা হয় সাত হাজার ‘নাইট্রোসান-১০’ ট্যাবলেট এবং উইনসিরিক্স কাশির সিরাপের ১০০ মিলিলিটারের ৩০টি প্লাস্টিকের বোতল। গ্রেফতার করা হয়েছে বাড়ির মালিক শেখ নিজামুদ্দিন এবং তার সঙ্গী মমতাজ আলি সর্দারকে। সিটি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (গোয়েন্দা বিভাগ) অনুপম সিংহ বলেন, ‘‘ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এর পিছনে বড় কোনও চক্র রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
স্থানীয় সূত্রের খবর, অঙ্কুরহাটি মোড়ের কাছেই ওই বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে থাকে নিজামুদ্দিন। পায়ে ঘা থাকায় সে কোনও কাজ করতে পারে না। দিনের বেশির ভাগ সময়েই তাকে রাস্তার ধরে বসে থাকতে দেখা যেত। মাঝেমধ্যে জাতীয় সড়কের ধারে গাড়ি দাঁড় করিয়ে কয়েক জন যুবক তার সঙ্গে কথা বললেও তাতে তেমন আমল দিতেন না স্থানীয়েরা। তবে বেশ কিছু দিন ধরেই পুলিশের সন্দেহ হয়। জাতীয় সড়ক ঘেঁষা ওই বাড়ি থেকে বেআইনি কিছু কাজকর্ম চলছে বলেই অনুমান করেন গোয়েন্দারা। তার পরেই ওই বাড়ির উপরে নজর রাখতে শুরু করে হাওড়া সিটি পুলিশ।
এর মধ্যেই বুধবার গোয়েন্দারা জানতে পারেন, বাইরে কোনও জায়গা থেকে নিজামুদ্দিনের বাড়িতে নিষিদ্ধ কিছু ওষুধ ঢুকছে। যা রাতের অন্ধকারে জাতীয় সড়কে দাঁড়িয়েই বিক্রি করা হচ্ছে। আর সেই সব জিনিস সরবরাহ থেকে বিক্রি সবেতেই সহযোগিতা করছে নিজামুদ্দিনেরই এক আত্মীয় মমতাজ আলি সর্দার। এর পরেই ডোমজুড় থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ওই দিন রাতে অঙ্কুরহাটির বাড়িতে হানা দেন গোয়েন্দারা। দরজায় কয়েক বার ধাক্কা দিতেই দরজা খোলেন বাড়ির সদস্যেরা। ভিতরেই তখন ছিল ওই দু’জন। ওষুধগুলি উদ্ধারের পাশাপাশি গ্রেফতার করা হয় তাদেরও।