গ্রাফিক— তিয়াসা দাস।
তিন রাত্রি পুলিশ হেফাজতে কাটানোর পর শেষ পর্যন্ত পঞ্চসায়রের হোমের মহিলাকে যৌন নির্যাতন করার কথা স্বীকার করল ধৃত ট্যাক্সিচালক উত্তম রাম। পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার রাতে এক বার ঘটনার পুনর্নির্মাণ করার পরও বেশ কয়েকটি বিষয়ে ধোঁয়াশা ছিল। সেই বিষয়গুলো পরিষ্কার করার জন্য মঙ্গলবার সকালে ডিসি (পূর্ব ডিভিশন) রূপেশ কুমারের নেতৃত্বে তদন্তকারীরা ফের উত্তমকে নিয়ে পুনর্নির্মাণ করতে যান।
কলকাতার গোয়েন্দা প্রধাম মুরলিধর শর্মা বলেন, ‘‘ফের এ দিন পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে। নতুন অনেক তথ্য পাওয়া গিয়েছে।” পুলিশ সূত্রে খবর, ওই সময় উত্তম স্বীকার করে, কাঠিপোতায় যেখানে সে নির্যাতিতাকে নামিয়ে দিয়েছিল গাড়ি থেকে, তার কিছুটা আগে ওই রাস্তাতেই একটি ফাঁকা জায়গায় গাড়ি দাঁড় করায়। সেখানে গাড়ির মধ্যেই যৌন নির্যাতন করে ওই মহিলাকে। তদন্তকারীদের এক জন বলেন, ‘‘প্রথম দিন থেকে তদন্তকাকীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে ধৃত। প্রথমে নির্যাতিতাকে গাড়িতে তোলার কথাই অস্বীকার করেছিল সে। পরে সিসি ক্যামেরা ফুটেজ দেখানোর পর সে স্বীকার করে যে, ওই মহিলাকে গাড়িতে তুলেছিল সে।” তবে উত্তম প্রথম থেকে কোনও রকমের যৌন নির্যাতনের কথা অস্বীকার করে। এক তদন্তকারী বলেন, ‘‘ধৃত দাবি করেছিল সে এতটাই মত্ত ছিল যে সে অনেক কিছু মনে করতে পারছে না।” তদন্তকারীদের দাবি, প্রথম থেকেই তাঁদের সন্দেহ ছিল যে ধৃত বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।
এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘ধৃতের যে খারাপ কোনও উদ্দেশ্য ছিল তার প্রমাণও পাওয়া গিয়েছে। কারণ সোজা রাস্তায় কাঠিপোতা পৌঁছনোর জন্য খাল পেরোতে যে সেতু পেরোতে হয়, সেই সেতু না পেরিয়ে সে ঘুর পথে গিয়েছিল। কারণ সে জানত, ওই সেতুর ওপারে যে ক্লাবটি রয়েছে সেখানে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। ক্যামেরা এড়াতেই সে ঘুর পথ ধরে।”
আরও পড়ুন: ৫ দিনে দ্বিতীয় বার মুর্শিদাবাদ সফরে রাজ্যপাল, এ বার সিপিএম বিধায়কের আমন্ত্রণে, জানাল রাজভবন
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, যে খানে ওই মহিলাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়েছিল উত্তম সেখান থেকে গ্রামের দূরত্ব মাত্র ৩০০ মিটার। অন্য দিকে উত্তমের ট্যাক্সি ফিরে যাওয়ার একটি ফুটেজ পাওয়া গিয়েছে ১২টা ৫৬ মিনিটে। গ্রামের যে কীর্তনিয়ারা নির্যাতিতাকে প্রযম দেখতে পেয়েছিলেন, তাঁদের দাবি ১টা ২০ নাগাদ তাঁরা ওই মহিলাকে দেখতে পান। ফলে গাড়ি থেকে নামানোর পর ফের কোনও নির্যাতনের ঘটনা ঘটেনি বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। একই সঙ্গে কোনও ফুটেজেই গাড়িতে চালক ও নির্যাতিতা ছাড়া অন্য কারওর থাকার প্রমাণ মেলেনি। সেখান থেকে গোটা ঘটনায় উত্তম ছাড়া অন্য কোনও অভিযুক্তেক যোগ থাকার সম্ভবনা ক্ষীণ বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা।
অন্য দিকে এ দিন নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দি রেকর্ড হওয়ার কথা থাকলেও আইনি জটিলতায় তা অন্য দিন করা হবে বলে স্থির করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভয় আর হতাশা থেকেই ‘সংখ্যালঘু উগ্রপন্থা’ মন্তব্য করেছেন মমতা, পাল্টা তোপ আসাদউদ্দিনের