প্রতীকী ছবি।
শহরে রক্তদানের পরিবর্তে দাতাদের ইলিশ মাছ এবং ইনডাকশন কুকার দেওয়াকে ঘিরে বিতর্ক হয়েছে। এ বার রক্তদান শিবিরের আয়োজন করতে চলা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় তাই খানিক সাবধানি। তাদের আসন্ন শিবিরে প্রত্যেক রক্তদাতাকে উপহার হিসাবে দেওয়া হবে একটি চারাগাছ।
‘ট্রিভোলিউশন’ শীর্ষক এই রক্তদান শিবিরে আয়োজন করা হয়েছে ৭ নভেম্বর। আয়োজক বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএফআই শাখা। সিদ্ধান্ত হয়েছে, রক্তদান করলেই দেওয়া হবে চারাগাছ। রক্ত দেওয়ার পরিবর্তে উপহারের বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক বহু দিন। বিতর্ক এড়াতে এবং সবুজ রক্ষার কথা মাথায় রেখে সেখানে যাদবপুরের পড়ুয়ারা চারাগাছ উপহার দেওয়ার কথা ভেবেছেন। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএফআই শাখার কলা বিভাগের সভানেত্রী উষসী পালের যুক্তি, বিশ্ব পরিবেশ যে জায়গায় দাঁড়িয়েছে তাতে যে কোনও যুক্তিতেই গাছ দেওয়া প্রাসঙ্গিক। তিনি বলেন, ‘‘মানুষের জীবন রক্ষায় রক্তই ভরসা। অন্য দিকে, গাছ পরিবেশকে বাঁচায়। যার জেরে সুরক্ষিত থাকবে মানব সভ্যতা।’’
ওয়েস্ট বেঙ্গল ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরাম-এর সাধারণ সম্পাদক অপূর্ব ঘোষ রক্তদানে উপহার দেওয়ার ঘোরতর বিরোধী। সম্প্রতি উত্তর কলকাতার রক্তদান শিবিরে ইলিশ মাছ ও ইনডাকশন কুকার দেওয়ার ঘটনায় তিনি বলেছিলেন, ‘‘এ ভাবে উপহার দেওয়া ঠিক নয়। এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। প্রশাসনের পদক্ষেপ করা উচিত।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘যাঁরা রক্ত দেন, তাঁদের একটি ফর্ম পূরণ করতে হয়। তাতে চিকিৎসকের সই থাকে। সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাঙ্ক ওই রক্ত সংগ্রহ করেছে। উপহার দেওয়া হচ্ছে দেখেও কেন ওই চিকিৎসকেরা ব্যবস্থা নিলেন না? তাঁদেরও সমান শাস্তি হওয়া উচিত।’’
যদিও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএফআই-এর উদ্যোগে আয়োজন হতে চলা রক্তদান শিবিরে চারাগাছ দেওয়ার পরিকল্পনাকে তিনি সাধুবাদ জানিয়েছেন। তাঁর মতে, ‘‘রক্ত দিলে চারাগাছ দেওয়া হবে, এই ধরনের পরিকল্পনাকে আরও উৎসাহিত করা উচিত। এটা একটা সামাজিক কাজ। আজকের বিশ্ব উষ্ণায়নের যুগে চারাগাছ উপহার দেওয়া এবং তা বাঁচিয়ে রাখার অর্থ পরিবেশকে রক্ষা করা। যত বেশি গাছ লাগানো হবে, তত পরিবেশ সবুজ হবে।’’