অনুপ নন্দী।
প্রতিবেশীর সঙ্গে বচসাকে ঘিরে এক ব্যক্তির মৃত্যু হল। এই ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বিধাননগরের সুকান্তনগরে। মৃতের নাম অনুপ নন্দী (৫৬)। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, রড দিয়ে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে অনুপকে। একই অভিযোগ তুলেছেন এলাকার বাসিন্দাদের একাংশও। এই ঘটনায় অনুপের প্রতিবেশী উজ্জ্বল দাস নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত উজ্জ্বল জলের ব্যবসা করেন। জলের বড় বড় পাত্র বোঝাই গাড়ি তিনি দাঁড় করিয়ে রাখতেন পেশায় অটোচালক অনুপদের বাড়ির সামনে। এই নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে কিছু দিন ধরে অশান্তি চলছিল। অনুপরা বারণ করলেও উজ্জ্বল সেখান থেকে গাড়ি সরাতেন না বলে অভিযোগ। জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার একই ঘটনা ঘিরে ফের দু’তরফে বচসা বাধে। পুলিশের দাবি, অনুপ এবং উজ্জ্বলের মধ্যে সেই বচসা গড়ায় মারামারিতে। অনুপ পড়ে গিয়ে মাথায় চোট পান। রাতেই পরিবারের লোকজন তাঁকে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে অনুপকে পাঠানো হয় এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে বৃহস্পতিবার মারা যান তিনি।
বিধাননগর (দক্ষিণ) থানার পুলিশ জানিয়েছে, প্রথমে উজ্জ্বলের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এ দিন অনুপের মৃত্যুর পরে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। উজ্জ্বলকে এ দিন আদালতে হাজির করা হলে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
স্থানীয় সূত্রের খবর, অনুপ ও উজ্জ্বলের মধ্যে এই গোলমাল এক বার স্থানীয় কাউন্সিলর জয়দেব নস্করের অফিসে গিয়েও মেটানো হয়েছিল। সেই সময়ে কিছু দিন সব শান্তিপূর্ণ থাকার পরে ফের দু’তরফে অশান্তি শুরু হয়। অনুপের ছেলে অভিজিৎ এ দিন বলেন, ‘‘জলের গাড়ি রাখা নিয়ে গোলমাল। বাবা জলের গাড়ি রাখতে বারণ করেছিলেন। তার পরেই ওই লোকটি বাবাকে মারধর করেন। হাসপাতালে বাবার মৃত্যু হয়।’’ তাঁর অভিযোগ, অনুপকে রড দিয়ে মেরে খুন করা হয়েছে।
একই অভিযোগ এনেছেন জয়দেবও। তিনি বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তি অটো চালিয়ে সংসার চালাতেন। সামান্য একটি ঘটনাকে ঘিরে তাঁকে রড দিয়ে মেরে খুন করা হয়েছে। খুবই বাজে ঘটনা। পরে ওঁর পরিবার পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে গেলে তাঁদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছে।’’
বিধাননগর (দক্ষিণ) থানার পুলিশ অবশ্য কাউন্সিলরের এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, মঙ্গলবার রাতে এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অনুপকে ভর্তি করানোর পরে ওঁর পরিবার থানায় এসেছিল। মাঝরাতেই অভিযোগ দায়ের করা হয় এবং বুধবার দুপুরের মধ্যে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।