বাজি ঘিরে বচসা, মারা গেলেন ছুরিকাহত যুবক

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে মারা গেলেন চন্দন দে (৩৯) নামে ছুরিকাহত ওই যুবক। পুলিশ জানিয়েছে, বাজি ফাটানো নিয়ে বচসার জেরেই এই ঘটনাটি ঘটেছে বেহালা থানার মজলিশ আরা রোডে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৫ ১৬:৪০
Share:

ভেতর থেকে তালা দেওয়া গ্রিলে। ঘরের ভেতর ঘুটঘুটে অন্ধকার। যদিও সবাই জানে ঘরের ভেতর মানুষ রয়েছে, কিন্তু বারবার করে ডাকা সত্ত্বেও সাড়া দিচ্ছে না কেউ। বাইরে থেকে কয়েক জন তখন গ্রিল ধরে ঝাঁকাচ্ছেন। হঠাৎই ঘরের পর্দা সরিয়ে বারান্দায় বেরিয়ে এলেন এক যুবক। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওই যুবক গ্রিলের ফাঁক দিয়ে হাত গলিয়ে আচমকাই ছুরি বসিয়ে দিলেন বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা অন্য এক যুবকের পেটে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে মারা গেলেন চন্দন দে (৩৯) নামে ছুরিকাহত ওই যুবক। পুলিশ জানিয়েছে, বাজি ফাটানো নিয়ে বচসার জেরেই এই ঘটনাটি ঘটেছে বেহালা থানার মজলিশ আরা রোডে। অভিযুক্তের নাম বাপি মণ্ডল।

পুলিশ সূত্রে খবর, বুধবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ এলাকার কয়েক জন রাস্তার ওপর বাজি ফাটাচ্ছিলেন। তখনই একটি তুবড়ি ফেটে আগুনের ফুলকি গিয়ে পড়ে বাপি মণ্ডল নামে এক যুবকের বাড়ির উঠোনে। সঙ্গে সঙ্গেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাপি গালিগালাজ করতে শুরু করে। বাপিকে থামাতে এগিয়ে আসেন স্থানীয় বাসিন্দা প্রহ্লাদ হালদার। তখনই ঘর থেকে বঁটি নিয়ে এসে প্রহ্লাদের হাতে কোপ মারে বাপি। এরপরই বাপি নিজের ঘরে ঢুকে বারান্দার গ্রিলে ভেতর থেকে তালা দিয়ে দেয়। নিভিয়ে দেয় আলো।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, প্রহ্লাদবাবুকে নিয়ে কয়েক জন প্রতিবেশী রওনা দেন হাসপাতালের উদ্দেশে। এরই মধ্যে এলাকার আরও কয়েক জন বাপি মণ্ডলের বাড়ির সামনে জমায়েত হন। তাঁদের মধ্যেই ছিলেন চন্দন দে। তিনি যখন বাপির ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে বাপির নাম ধরে ডাকছিলেন তখনই হঠাৎ তাঁর পেটে ছুরি বসিয়ে দেয় বাপি। ক্ষত স্থান থেকে গলগল করে রক্ত বেরোতে শুরু করে। স্থানীয় বাসিন্দারা তখন চন্দনবাবুকে নিয়ে যান এম আর বাঙুর হাসপাতালে। রাতে তাঁকে সেখান থেকে নিয়ে আসা হয় কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে। সেখানেই বৃহস্পতিবার সকালে মৃত্যু হয় চন্দনবাবুর। যদিও প্রথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয় প্রহ্লাদবাবুকে। তাঁর হাতে আঠারোটি সেলাই পড়েছে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, চন্দনবাবু আহত হওয়ার পরই এলাকার লোকজন বাপি মণ্ডলের বাড়িতে বাইরে থেকে তালা দিয়ে থানায় খবর দেন। কিছু ক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় বেহালা থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, এলাকার কারোও সঙ্গেই সদ্ভাব ছিল না বাপিদের পরিবারের। বাপির দুই বিয়ে। মা, ভাই এবং দুই স্ত্রীকে নিয়েই থাকতেন বাপি। ইদানীং মুদি দোকান চালালেও এক সময় বাপি নানা ছোটখাটো অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিল বলেই অভিযোগ। রাতেই পুলিশ বাপি এবং তার ভাই বাবু মণ্ডলকে গ্রেফতার করে। বাপির বাড়ি থেকে বঁটি এবং ছুরিটিও আটক করেছে পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement