গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আততায়ী হিন্দি ভাষায় দেওয়ালে লিখে গিয়েছিল, “সিআইডি রাজ সাবধান, আগর জাদা চালাকি করোগে, তো খুদই ফাঁস যাওগে...।” সেই সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছিল একটি গানের খাতাও। এই দু’য়ের যোগসূত্রে উল্টোডাঙার ডালকল খুনের কিনারা করল কলকাতা পুলিশ। আততায়ীর নাম শাকিল খান। তাঁকে দেশবন্ধু পার্ক এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কী ভাবে রহস্যের কিনারা হল?
গত বুধবার উল্টোডাঙার গোরাপদ সরকার লেনের একটি ডালকলের ভিতরে রাকেশ সাউ নামে বছর তিরিশের এক যুবকের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। গলার কাছে এবং মাথায় গভীর ক্ষত ছিল। পুলিশ জানতে পেরেছে, রাতে সেখানেই ঘুমাতেন রাকেশ। ঘটনার দিন রাতেও তিনি মালিক পরেশ সাউয়ের কাছ থেকে গুদামের চাবি নিয়ে গিয়েছিলেন। সকালে পরেশবাবু সেখানে পৌঁছে দেখেন, রাকেশের দেহ পড়ে রয়েছে। তিনিই পুলিশে খবর দেন।
উল্টোডাঙার ডালকল খুনের তদন্ত করতে গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে একটি গানের খাতা পাওয়া যায়। তাতে হিন্দি এবং বাংলা ভাষায় বেশ কয়েকটি গান লেখা ছিল। তদন্তকারীরা লক্ষ্য করেন, দেওয়ালে পুলিশের উদ্দেশে হুমকিও দেওয়া হয়েছে। দেওয়াল লিখনের সঙ্গে খাতার হাতের লেখা মিলিয়ে দেখা হয়। জানা যায়, দুটি লেখা একজনেরই। কিন্তু কে সে?
আরও পড়ুন: লকডাউনে ডাক্তার দেখানোর ভুয়ো তথ্য, গ্রেফতার যাত্রী
আততায়ীর খোঁজ করার পাশাপাশি, মৃত যুবকের পরিচিতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছিল। তাদেরই একজনের কাছ থেকে জানা যায়, গানের খাতা শাকিল খানের। তাঁর গান লেখার শখ ছিল। শাকিলের খোঁজ শুরু হয়।
কিন্তু খুনের পর থেকে বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপন করেছিল বীরভূমের বাসিন্দা শাকিল। শেষ পর্যন্ত দেশবন্ধু পার্কের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তবে কী কারণে, রাকেশ সাউকে খুন করতে গেল শাকিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এই ঘটনায় আর কেউ জড়িত কি না, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। যদিও খুনের ঘটনাটি শাকিল স্বীকার করে নিয়েছে বলে দাবি দাবি পুলিশের। শাকিলও ওই ডালকলে অস্থায়ী কর্মী ছিল। ইস্ট-সুবার্বান ডিভিশনের ডিসি অজয়প্রসাদ জানান, “দেওয়ালের লেখা এবং গানের খাতার লেখার সূত্র ধরে শাকিলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে কী কারণে খুন, এখনওউল্টোডাঙ স্পষ্ট নয়।” যদিও পুলিশ সূত্রে খবর, খুনের নেপথ্য জুয়া অথবা মাদক নিয়ে ঝামেলার কারণ থাকতে পারে।