স্বপন মারজিৎ —ফাইল চিত্র।
গাড়ি থেকে ভারী মার্বেল পাথর নামানোর সময়ে সেই পাথর চাপা পড়েই মারা গেলেন এক শ্রমিক। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও এক জন। সোমবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বেলেঘাটা থানা এলাকার হেমচন্দ্র নস্কর রোডে,একটি নির্মীয়মাণ বাড়ির সামনে। মৃত যুবকের নাম স্বপন মারজিৎ (৩৫)। তাঁর বাড়ি বীরভূমের রামপুরহাটে। তিনি সপরিবার কেষ্টপুরে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন। আহত যুবকের নাম অমর মণ্ডল। তাঁর ডান পা ভেঙে গিয়েছে। তিনি সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সোমবার রাত আড়াইটে নাগাদ স্বপন-সহ প্রায় ২০ জন কর্মী মার্বেল বোঝাই একটি গাড়ি থেকে পাথর নামানোর কাজ করছিলেন। অন্য কর্মীরা জানান, গাড়ি থেকে পাথর নামানোর সময়ে হঠাৎই পাথরগুলি এক দিকে হেলে পড়ে। টাল সামলাতে না পেরে ভারী পাথরের স্তূপের নীচে চাপা পড়ে যান স্বপন। অমর বেরিয়ে আসার চেষ্টা করলেও তাঁর ডান পায়ের উপরে একাধিক পাথর পড়ে। যার ফলে সেই পা ভেঙে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, ভারী লোহার পাইপ দিয়ে মার্বেল পাথর সরিয়ে স্বপনকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন বাকি কর্মীরা। কিন্তু সেই সময়ে তাঁর জ্ঞান ছিল না। সঞ্জয় মাল নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘‘স্বপন ভারী ভারী অনেকগুলি মার্বেল পাথরের স্তূপের নীচে চাপা পড়েছিল। অনেক কষ্টে যখন ওকে আমরা উদ্ধার করি, তখন ওর মাথা ও নাক থেকে রক্ত বেরোচ্ছে।’’ খবর দেওয়া হয় বেলেঘাটা থানার পুলিশকে। পুলিশ এসে স্বপন ও অমরকে উদ্ধার করে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকেরা স্বপনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। আহত অমরকে পরিবারের লোকেরা সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন।
মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, বেশ কিছু ভাঙা মার্বেল পাথর ওই নির্মীয়মাণ বাড়ির সামনে পড়ে রয়েছে। থানায় গিয়েছিলেন মৃতের স্ত্রী পিঙ্কি মারজিৎ। তিনি ঘন ঘন জ্ঞান হারাচ্ছিলেন। তাঁকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টাকরছিলেন পরিবারের লোকজন। স্ত্রী ছাড়াও কিশোর ছেলে ও কিশোরী মেয়ে রয়েছে স্বপনের। স্বপনের এই মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না পরিবারের লোকেরা। স্বপনের স্ত্রী পরিচারিকার কাজ করেন। দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে এখন কীভাবে তিনি সংসার চালাবেন, সেটাই বড় চিন্তা পরিজনদের। বেলেঘাটা থানার পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।