প্রতীকী ছবি।
মালিকের অফিস থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বোঝাই দু’টি কম্পিউটারের সিপিইউ চুরির অভিযোগে সম্প্রতি হাওড়া থেকে এক যুবককে ধরল ওয়াটগঞ্জ থানার পুলিশ। ধৃতের নাম তৌকির জিয়া।
পুলিশ সূত্রের খবর, সম্প্রতি এই চুরির অভিযোগ জানিয়েছিলেন জিন্স তৈরির কারখানার মালিক সফিউল্লা খান নামে এক ব্যক্তি। তাঁর মূল অফিস খিদিরপুর এলাকার ডেন্ট মিশন রোডে। পুলিশকে তিনি জানান, গত ৪ অগস্ট সেই অফিসে গিয়ে দেখেন, দু’টি কম্পিউটারের সিপিইউ উধাও। টেবিলে মনিটর দু’টি রয়েছে। অথচ অফিসে থাকা কয়েক লক্ষ টাকার জিন্স সরেনি। ওই দু’টি সিপিইউয়ে ব্যবসার হিসেব, আয়কর-সহ নানা সরকারি দফতরের গুরত্বপূর্ণ নথি, তাঁর গ্রাহকদের নাম ও ঠিকানা রাখা ছিল। এর পরেই সফিউল্লা ওয়াটগঞ্জ থানায় চুরির অভিযোগ দায়ের করেন।
তদন্ত নেমে জানা যায়, অফিসের সিসি ক্যামেরা মাস চারেক ধরে খারাপ। এ দিকে, ব্যবসা বন্ধ থাকলেও প্রায় প্রতিদিন নিজের অফিসে যেতেন সফিউল্লা। রাত আটটা পর্যন্ত থাকতেন। তদন্তকারীরা দেখেন, অফিসের দরজার তালাও ভাঙা হয়নি। তবে কী ভাবে সিপিইউ গায়েব হল? তখনই তাঁরা সিদ্ধান্তে আসেন, কোনও পরিচিত লোকই এ কাজ করেছেন।
তদন্ত এগোতে ওই ব্যবসার সঙ্গে যোগ রয়েছে সফিউল্লার এমন পরিচিতদের তালিকা তৈরি করা হয়। ওই ব্যবসায়ী জানান, মার্চে লকডাউন শুরুর পরে লোকসান কমাতে কয়েক জন কর্মীকে ছাঁটাই করেন। তাঁদের এক জন অফিসে এসে মাঝেমধ্যেই শাসিয়ে যেতেন। আবার কাজ দেওয়ার অনুরোধও করতেন। হাওড়ার বাসিন্দা ওই কর্মচারী তৌকির ২০১০ সাল থেকে সেখানে কাজ করতেন। অন্যদের খোঁজ নেওয়ার পাশাপাশি ওই যুবকের উপরেও নজরদারি শুরু হয়। এক তদন্তকারীর কথায়, তালিকা ধরে সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করেও চুরির সূত্র মেলেনি। এর পরেই তৌকিরকে আটক করে জেরা করা হলে তিনি সিপিইউ চুরির কথা স্বীকার করেন বলে পুলিশের দাবি। তৌকির জানান, কাজ চলে যাওয়ায় মালিককে শিক্ষা দিতেই এ কাজ করেছেন তিনি।
কী ভাবে চুরি করলেন তৌকির?
সন্ধ্যার পরে তিনি অফিসে যখন যেতেন, তখন শুধুমাত্র সফিউল্লাই অফিসে নিজের ঘরে থাকতেন। তার পাশের ঘরেই ওই দু’টি কম্পিউটার থাকত। সেগুলি যে মালিকের ‘প্রাণভোমরা’ জানতেন তৌকির। ৩ অগস্ট সফিউল্লার সঙ্গে কিছু ক্ষণ কথা বলে ঘর থেকে বেরিয়ে সিপিইউ দু’টি নিয়ে চলে যান তৌকির। অফিসের সিসি ক্যামেরা যে খারাপ তা-ও তিনি জানতেন। তাই ধরা না-পড়া নিয়ে এক প্রকার নিশ্চিত ছিলেন বলেই তৌকির জেরায় তদন্তকারীদের জানিয়েছেন।