প্রতীকী ছবি
প্রতিটি নামই ইতিহাসে প্রসিদ্ধ। আর প্রতারণায় সেই সব নামই ব্যবহার করা হত। তবে তা নিয়ে কেউ সন্দেহ প্রকাশ করেননি। ফলে বাড়িতে মোবাইল টাওয়ার বসিয়ে রোজগারের সুযোগ করে দেওয়ার টোপ দিয়ে নেওয়া হচ্ছিল মোটা অঙ্কের টাকা। শেষ পর্যন্ত এক সেনা জওয়ানকে প্রতারণা করে পুলিশের জালে ধরা পড়ে গেল চক্রের অন্যতম চাঁই। নৈহাটি থেকে ইন্দ্রজিৎ চৌধুরী নামে এক যুবককে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করল ময়দান থানার পুলিশ।
পুলিশ জানায়, আসানসোলের বাসিন্দা এক সেনা জওয়ানের সঙ্গেও প্রতারকেরা একই ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করে। ওই জওয়ান ফোর্ট উইলিয়ামে কর্মরত। তাঁর থেকে কয়েক বারে আড়াই লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু তাঁর বাড়িতে টাওয়ার বসেনি। এর পরে তিনি ময়দান থানায় অভিযোগ জানান।
পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করে জানতে পারে, প্রতারকেরা তৈমুর লং, বাবর, পৃথ্বীরাজ নামে নিজেদের পরিচয় দিত। কিন্তু তা সত্ত্বেও কারও সন্দেহ হয়নি। ওই জওয়ান অভিযোগে পুলিশকে জানান, তাঁর বাড়িতে মোবাইল টাওয়ার বসানোর জন্য গত বছর ফোনে যোগাযোগ করে কয়েক জন। তিনি সেই সময় শিলিগুড়িতে কর্মরত ছিলেন। অভিযুক্তেরা ওই জওয়ানকে জানায়, তাঁকে শুধু প্রসেসিং ফি বাবদ আড়াই লক্ষ টাকা দিতে হবে। বাড়ির বিদ্যুতের বিল, আলাদা ঘর- সবেরই ব্যবস্থা করবে মোবাইল টাওয়ারের সংস্থা। এমনকি টাওয়ার বসানোর জন্য মোটা টাকাও ওই জওয়ানকে দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। তিনি তিনটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট মারফত টাকা জমা দেন। কিন্তু টাওয়ার বসানো হয়নি। টাকাও ফেরত পাননি।
অভিযোগ পেয়ে ওই তিনটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করেন তদন্তকারীরা। দেখা যায়, অ্যাকাউন্টে লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ব্যাঙ্কে ‘কেওয়াইসি’ জমা দেওয়া হয়েছে ভুয়ো নামে। যে ফোন নম্বরগুলি থেকে যোগাযোগ ওই জওয়ানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল, সেগুলি পরীক্ষা করে দিন কয়েক আগে তুষার মিত্র নামে বীজপুরের এক বাসিন্দাকে গ্রেফতার করে ময়দান থানা। তাকে জেরা করে জানা যায়, ইন্দ্র নামে উত্তর ২৪ পরগনার এক যুবক ওই প্রতারণা চক্রে জড়িত।
এর পরে সোশ্যাল মিডিয়া হাতড়ে ২৫০ জন ইন্দ্রকে বাছাই করে তুষারকে তাদের ছবি দেখানো হয়। তার মধ্যে তুষার শনাক্ত করে ইন্দ্রজিৎ চৌধুরীকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বাইক নিয়ে ইন্দ্রজিতের একটি ছবি ছিল। সেটির নম্বর প্লেট দেখে পুলিশ ইন্দ্রজিতের নৈহাটির বাড়ির ঠিকানা পায়। এর পরে বৃহস্পতিবার সেখানে তল্লাশি চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।