গত দু’দিনেই ইএম বাইপাসে ট্র্যাফিক আইন ভাঙার সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার!
গত দু’দিনেই ইএম বাইপাসে ট্র্যাফিক আইন ভাঙার সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার! শুধু কলকাতা পুলিশের অধীন এলাকাতেই বৃহস্পতিবারের সংখ্যাকে ছাপিয়ে গেল শুক্রবারের পরিসংখ্যান। চিংড়িঘাটার যানশাসন নিয়ে খোদ মুখ্যমন্ত্রী বিরক্তি প্রকাশের পরেও এই সংখ্যা বৃদ্ধি কেন? পুলিশের একটি মহল অবশ্য বলছে, যানশাসন কড়া হতেই নিয়মভঙ্গের প্রবণতা বেশি করে ধরা পড়ছে। তাই পরিসংখ্যানের বাড়বাড়ন্ত।
পুলিশ সূত্রের খবর, বৃহস্পতি ও শুক্রবার মিলিয়ে কলকাতা পুলিশের অধীন বাইপাসে মোট ১৪৭০টি ট্র্যাফিক আইন ভাঙার মামলা রুজু হয়েছে। বৃহস্পতিবার ৬৮১টি মামলা হয়েছিল। বাকি ৭৮৯টি রুজু হয়েছে শুক্রবার। ওই দু’দিনে চিংড়িঘাটায় ট্র্যাফিক আইন ভাঙার অপরাধেও একাধিক মামলা হয়। এত সচেতনতা, প্রচার, নজরদারির পরেও ট্র্যাফিক আইন ভাঙার প্রবণতা প্রশ্ন তুলছে, আর কবে সচেতন হবেন নাগরিকেরা?
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে চিংড়িঘাটা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বুধবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানতে চেয়েছিলেন, ‘‘চিংড়িঘাটায় রোজ দুর্ঘটনা ঘটে কেন?’’ কলকাতা পুলিশ ও বিধাননগর কমিশনারেটের উদ্দেশ্যে কার্যত ধমকের সুরে তিনি বলেন, ‘‘আর একটাও দুর্ঘটনা যেন না হয়।’’ এর পরেই দ্রুত চিংড়িঘাটা পরিদর্শন করেন কলকাতা ট্র্যাফিক ও বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশকর্তারা। নজরদারি বাড়ানো হয় বাইপাসে। এর পরেই একের পর এক আইন ভাঙার ঘটনা সামনে আসছে।
শনিবার বাইপাস ঘুরে দেখা গেল বিধিভঙ্গের একাধিক চিত্র। কোথাও দেখা গেল, সিগন্যাল সবুজ থাকা অবস্থায় পথচারীকে রাস্তা পারাপার করতে, কোথাও আবার বিনা হেলমেটেই বাইকে বসে গতির তুফান ছোটালেন কেউ। বাইপাসে কর্তব্যরত এক পুলিশকর্মী বলেন, ‘‘নজরদারি বাড়িয়ে মামলা রুজু করে কত আটকাব! সুযোগ পেলেই একাংশের বেপরোয়া গাড়ি চালানোর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। দিনে ভিড়ের চাপে গতি কিছুটা নিয়ন্ত্রিত হলেও রাত বাড়তেই পর পর গাড়ি ছোটে বেপরোয়া গতিতে। মানুষ সচেতন না হলে আইন ভাঙার সংখ্যা কমানো কঠিন। ফলে দুর্ঘটনায় রাশ টানা দুরূহ হয়ে যাচ্ছে।’’
কলকাতা পুলিশের তথ্য বলছে, গত এক বছরে বাইপাসে তাদের অংশে দুর্ঘটনার জেরে ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে। জীবনহানি ঘটেছে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের দিকেও। জনগণের একটি অংশের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বেগ প্রকাশের পরে চিংড়িঘাটার নিরাপত্তা বাড়ানো হলেও বাইপাসের বাকি অংশের নজরদারি এখনও কার্যত ঢিলেঢালা। গোটা বাইপাসেই মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটে। তাঁদের প্রশ্ন, কেন গোটা পথে নিরাপত্তা বাড়ানো হবে না?
যদিও এই অভিযোগ মানতে নারাজ কলকাতা পুলিশের এক কর্তা। তাঁর কথায়, ‘‘শুধু চিংড়িঘাটা নয়, গোটা বাইপাস জুড়েই এ বার নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলিতে মোতায়েন করা হয়েছে বাড়তি পুলিশকর্মী। নজরদারির পাশাপাশি পথবিধি মানতে জনগণকে সচেতন করা হচ্ছে।’’