flyover

Sampriti flyover: একের পর এক দুর্ঘটনা সম্প্রীতি উড়ালপুলে, প্রশ্ন যান নিয়ন্ত্রণ নিয়ে

গত এক সপ্তাহে গভীর রাতের দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। ১১ সেপ্টেম্বর উড়ালপুলের দেওয়ালে ধাক্কা মেরে নীচে এসে পড়েছিলেন এক মোটরবাইক চালক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:৫২
Share:

ফাইল চিত্র

একের পর এক দুর্ঘটনা। এবং দুর্ঘটনার জেরে মৃত্যু। মহেশতলার সম্প্রীতি উড়ালপুলের নাম শুনলে উঠে আসছে এই প্রসঙ্গই। পর পর দুর্ঘটনা ঘটতে থাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশ্ন তুলেছেন, এই উড়ালপুল কি এখন মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে?
গত এক সপ্তাহে গভীর রাতের দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। ১১ সেপ্টেম্বর উড়ালপুলের দেওয়ালে ধাক্কা মেরে নীচে এসে পড়েছিলেন এক মোটরবাইক চালক। সুদীপ মণ্ডল (২৩) নামে ওই যুবকের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। গত বৃহস্পতিবার রাতে একই ভাবে বাইক নিয়ে দ্রুতগতিতে উড়ালপুলের দেওয়ালে ধাক্কা মেরে নীচে এসে পড়ে অনিমেষ সিংহ (১৬) নামে এক কিশোর। তাকে বজবজ ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। প্রীতম রায় নামে তার এক বন্ধু গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কয়েক সপ্তাহ আগে একটি ১০ চাকার লরি ভোরবেলা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উড়ালপুলের দেওয়ালে ধাক্কা মারার পরে নীচে এসে পড়ে। ভোরবেলায় তেমন পথচারী না থাকায় রাস্তায় কেউ জখম হননি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাতে উড়ালপুল দিয়ে লরি-সহ বিভিন্ন গাড়ি বেপরোয়া গতিতে চলে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে সেই কারণেই। সম্প্রতি দুর্ঘটনা ঘটেছে উড়ালপুলের উপরে, কিন্তু দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি ও জখম ব্যক্তি নীচে এসে পড়েছেন। এই নিয়ে এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। উড়ালপুলের নীচের রাস্তা ব্যবহার করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। যে কোনও মুহূর্তে উপর থেকে মোটরসাইকেল বা অন্য যানবাহন মাটিতে এসে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চলাচলের জন্য পুলিশের গাফিলতির দিকেই আঙুল তুলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

Advertisement

জিঞ্জিরাবাজার থেকে বাটা মোড় পর্যন্ত প্রায় সাত কিলোমিটার রাস্তার উপরে রয়েছে সম্প্রীতি উড়ালপুল। যান নিয়ন্ত্রণের পুলিশি ব্যবস্থা রয়েছে দুই প্রান্তে। উড়ালপুলের মাঝখানে তেমন কোনও নজরদারি নেই বলে অভিযোগ। মাঝেমধ্যে পুলিশের গাড়ি ঘোরাফেরা করে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। উড়ালপুলের উপরে গাড়ির গতি মাপার জন্য নেই স্পিড ক্যামেরাও। অভিযোগ, বার বার দুর্ঘটনা ঘটলেও বেপরোয়া গতি রোখার কোনও উদ্যোগ পুলিশের তরফে দেখা যায়নি।

নজরদারির অভাবের কথা অবশ্য অস্বীকার করেছেন ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার কর্তারা। তাঁদের বক্তব্য, উড়ালপুলের উপরে গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য নানা জায়গায় ‘গার্ড রেল’ দেওয়া রয়েছে। তা ছাড়া, কয়েক ঘণ্টা অন্তর পুলিশের টহলদারি গাড়িও ঘোরাফেরা করে। এক কর্তার কথায়, ‘‘কলকাতার শহর এলাকায় রাতে অধিকাংশ উড়ালপুলে যান চলাচলে বিধিনিষেধ রয়েছে। সম্প্রীতি উড়ালপুলের ক্ষেত্রে কোনও নিষেধ নেই। রাতে বজবজ শিল্পাঞ্চল থেকে বহু মালবাহী লরি উড়ালপুল দিয়ে যাতায়াত করে। সেই কারণে উড়ালপুল রাতে বন্ধ রাখা সম্ভব নয়।’’

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, রাতে উড়ালপুলের বদলে নীচের বজবজ ট্রাঙ্ক রোড দিয়ে গাড়ি গেলে সমস্যার অনেকটা সমাধান হয়। পুলিশকর্তারা অবশ্য জানাচ্ছেন, ওই রাস্তা খানাখন্দে ভর্তি। ভারী যান চলাচল করলে আরও বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। সে ক্ষেত্রে নীচের রাস্তাতেও দুর্ঘটনা বাড়বে। পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই রাস্তা বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। গত কয়েক মাসে নগরোন্নয়ন ও পূর্ত দফতরের কাছে রাস্তা সংস্কারের জন্য একাধিক বার লিখিত আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা হয়নি। ওই রাস্তা সংস্কার করা হলে উড়ালপুল দিয়ে যান চলাচল কিছুটা কমানো যেতে পারে। যান নিয়ন্ত্রণে নতুন পরিকল্পনাও করা যেতে পারে। কিন্তু এই মুহূর্তে উড়ালপুলের উপরেই নির্ভর করতে হচ্ছে।’’

তবে পর পর দুর্ঘটনার জেরে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলেই দাবি করছেন পুলিশকর্তারা। রাতেও নজরদারির বিশেষ ব্যবস্থা করা হচ্ছে। রাস্তা সংস্কারের বিষয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ওই রাস্তা সংস্কারের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement