হুড়মুড়িয়ে: ভেঙে পড়েছে বাড়ির এই অংশটিই। শুক্রবার, স্ট্র্যান্ড রোডে। ছবি: সুমন বল্লভ
পরপর দু’সপ্তাহে ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে ফোন করে নিজেদের বিপজ্জনক বাড়ি সম্পর্কে জানাতে চেয়েছিলেন সেখানকার বাসিন্দারা। কিন্তু মেয়রকে ফোনে পাননি। শুক্রবার সন্ধ্যায় সেই জীর্ণ বাড়িটিরই একটি অংশ ভেঙে পড়ল। ওই ঘটনায় দু’জন আহত হয়েছেন। তাঁদের কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০ নম্বর স্ট্র্যান্ড রোডের ওই তেতলা বাড়িতে ৩০টির মতো অফিস ও দোকানঘর রয়েছে। ঘটনাটি যখন ঘটে, তখন বেশ কয়েকটি অফিস ও দোকান খোলা ছিল। প্রথমে বাড়িটির ছাদের পাঁচিলের একাংশ ও একতলার সিঁড়ির একাংশ ভেঙে পড়ে। সিঁড়ি ভেঙে পড়ায় স্ট্র্যান্ড রোডের দিকের সদর দরজাটি আটকে যায়। বাড়ির বাসিন্দাদের পিছনের দরজা দিয়ে বেরোতে হয়।
ওই সময়ে বাড়িটির দোতলায় একটি অফিসে কাজ করছিলেন গৌতম মুখোপাধ্যায় নামে এক কর্মী। তিনি বলেন, ‘‘হঠাৎ হুড়মুড় করে কিছু ভেঙে পড়ার বিকট শব্দ হয়। আমাদের ঘরের চারপাশ ধুলোয় ভরে যায়। আশপাশের চিৎকারে বুঝতে পারি, আমাদের বাড়িই ভেঙে পড়ছে। প্রাণ হাতে করে কোনও রকমে পিছনের দরজা দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসি।’’ এলাকার আর এক বাসিন্দা স্বপন ভদ্র বলেন, ‘‘আমি ওই বাড়িটার খুব কাছেই ফুটপাতে দাঁড়িয়ে ছিলাম। অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছি! ফুটপাতের এক আলু বিক্রেতার উপরে ছাদের পাঁচিলের একাংশ ভেঙে পড়ায় তিনি মারাত্মক জখম হন। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।’’ ওই বাড়ির অন্য বাসিন্দারা জানান, সিঁড়ির কাছে কুরিয়র সংস্থার এক কর্মী প্যাকিং বাক্স নিয়ে উপরে উঠছিলেন। তাঁর মাথায় সিঁড়ির চাঙড় ভেঙে পড়ে। ওই বাড়িতে যাঁদের অফিস রয়েছে, তাঁদের অভিযোগ, বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রতি মাসে মালিক টাকা নিলেও কোনও রকম কাজ হয় না। বাড়ির মালিককে বারবার সারানোর কথা বলেও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ তাঁদের।
রাত আটটা নাগাদ ঘটনাস্থলে আসেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘‘বাড়িটি বিপজ্জনক। নোটিসও দেওয়া হয়েছিল। ভাগ্য ভাল, কারও বড় বিপদ হয়নি। সবাই বাইরে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন। কলকাতায় এ রকম বিপজ্জনক বাড়ি বেশ কয়েকটি রয়েছে। এটা একটা বড়
সমস্যা। সমাধানসূত্র খুঁজতে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বসব।’’