প্রতীকী ছবি
ভিড়ে ঠাসা চলন্ত বাস। হঠাৎ তারই মধ্যে থেকে ভেসে এল সদ্যোজাতের কান্নার আওয়াজ। বাসে থাকা এক নার্সের সন্দেহ হয়। তিনি সামনে বসা মহিলার কাছে জানতে চান। মহিলা জানান, ভিড় বাসের ঝাঁকুনিতে তাঁর প্রসব হয়ে গিয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে ধর্মতলা-গোচারণ রুটের একটি বাসে কামালগাজি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ওই নার্স জানান, তিনি চিৎকার করে বাস থামাতে বলেন। বাসের অন্য মহিলা যাত্রীদের থেকে কাপড় চেয়ে বাসেরই এক কোণ ঘিরে ফেলেন বীণা মণ্ডল। তিনি ক্যানিং কোভিড হাসপাতালের নার্স। গ্লাভস না থাকায় এক সহযাত্রীর থেকে প্লাস্টিক চেয়ে নেন বীণা। একটি নতুন ব্লেড এগিয়ে দেন এক যাত্রী। তা স্যানিটাইজ় করে শিশুকন্যাকে পুরোপুরি ভূমিষ্ঠ করিয়ে নাড়ি কাটেন বীণা। রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে প্রসূতি মায়ের ওড়না কেটে ব্যবহার করেন। বাস আবার রওনা দেয়।
সোনারপুরের বাসিন্দা বীণা ওই দিন নিজের ছেলেকে নিয়ে ফিরছিলেন কলকাতা থেকে। তিনি জানান, তাঁর দেড় বছরের ছেলে কান্নাকাটি করছিল। গন্তব্য চলে আসায় তিনি নেমে যান বাস থেকে। মহিলাকে বারুইপুর হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্য অনুরোধ করেন সহযাত্রীদের।
তবে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বারুইপুর হাসপাতালে এমন কোনও মহিলা ভর্তি হননি বলেই জানা গিয়েছে। তরুণীর পরিচয় জিজ্ঞাসা করেননি বীণা। শুধু জানতে পেরেছিলেন, তিনি ঘুটিয়ারি শরিফের বাসিন্দা। বীণা বলেন, ‘‘কর্তব্যের খাতিরে স্থির থাকতে পারিনি। তাই ঝুঁকি নিয়ে এগিয়ে যাই।’’
ঘুটিয়ারি শরিফ হাসপাতালের চিকিৎসক তথা ক্যানিং ১ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক রঞ্জন মণ্ডল বলেন, ‘‘ওই নার্স যে পরিস্থিতিতে সন্তান প্রসব করিয়েছেন, তা প্রশংসার দাবি রাখে।’’