বেহাল: উদ্বোধনের এক দিন আগেও মেলা প্রাঙ্গণে ছড়িয়ে রয়েছে নির্মাণ সামগ্রী। বুধবার, সল্টলেকে। নিজস্ব চিত্র
কটু গন্ধ। সঙ্গে দোসর মশাও।
আজ, বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার উদ্বোধন করার কথা। তার চব্বিশ ঘণ্টা আগে এমনই ছবি ধরা পড়েছে সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্ক প্রাঙ্গণে।
বুধবার মেলার মাঠে ঘুরে চোখে পড়ল কাঠ, দড়ি, কাপড়, প্লাই, খড়-সহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে আবর্জনা। তার মধ্যেই চলছে স্টল তৈরির কাজ। একইসঙ্গে বনবিতানের দিক থেকে ভেসে আসছে দুর্গন্ধ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, তৃণমূলের ব্রিগেডের সমাবেশের সময়ে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা দলীয় কর্মীদের মেলা প্রাঙ্গণেই থাকার ব্যবস্থা হয়েছিল। অভিযোগ, সেই সময়ে অনেকেই মাঠে প্রাকৃতিক কাজ সেরেছেন। তার জেরেই পরিবেশ দূষিত হয়ে দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করে। সোমবার রাতে বিধাননগরের বিধায়ক তথা দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু মেলার মাঠ পরিদর্শন করার সময়ে কটু গন্ধের কারণে তাঁর সামনেই অনেককে নাকে রুমাল চাপা দিতে দেখা যায়। সুজিতবাবু তখনই নির্দেশ দিয়েছিলেন ব্লিচিং ছড়াতে। কিন্তু বুধবার দুপুরেও সেই দুর্গন্ধ মেলা প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে পাওয়া গিয়েছে। টের পাওয়া গিয়েছে মশার উপদ্রবও। বুধবার বিকেলে মশার ঝাঁকও চোখে পড়েছে।
পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের অধিকর্তা সুধাংশু দে জানান, মুখ্যমন্ত্রী আসার আগেই বইমেলা জঞ্জালমুক্ত করার চেষ্টা চলছে। মশার উপদ্রব কমাতে বুধবার রাত থেকে দফায় দফায় ধোঁয়া দেওয়া হচ্ছে। বিধাননগর পুরসভার মেয়র
পারিষদ (জঞ্জাল ও নিকাশি) দেবাশিস জানার দাবি, মেলা প্রাঙ্গণের বাইরে সাফাইয়ের কাজ তাঁরা শুরু করে দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার থেকে সরকারের নির্দেশ মতো মেলার ভিতরেও সাফাইয়ের কাজ পুরসভা শুরু করে দেবে। মশার তেলও সব জায়গায় দেওয়া চলছে। মেলা মাঠের বাইরের ফোয়ারাও সাফ করে জল বদলে দেওয়া হয়েছে।
এমনই পরিস্থিতির মধ্যেই এ দিন মেলা শুরুর আগে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির কাজ চোখে পড়ে। দেখা যায় বনবিতান আর মেলাপ্রাঙ্গণের মাঝে পাঁচিল ভেঙে সেখানে লোহার গ্রিল বসানোর কাজ চলছে।
এ দিকে বুধবার বিধাননগর পুলিশ জানিয়েছে, এ বার পুলিশের সঙ্গে দমকল, নগরোন্নয়ন দফতর ও বিধাননগর পুরসভা মিলে একটি বিশেষ দল তৈরি করে বইমেলায় পরিচ্ছন্নতা, নিরাপত্তা-সহ নানা বিষয়ের উপরে নজরদারি চালানো হবে। ২০০-র বেশি সিসি ক্যামেরা, ২ হাজার পুলিশ কর্মী, অ্যান্টি মলেস্টেশন ও ক্রাইম টিম, কুইক রেসপন্স টিম থাকবে। মেলায় কন্ট্রোল রুম থাকবে। ‘মে আই হেল্প ইউ’ ডেস্ক ও থাকবে। মাঠটি চারটি জোনে ভাগ করে এক এক জন আধিকারিককে সুরক্ষা ও নজরদারির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।