ঘটনাস্থল: রাজাবাজার মোড়ে এখানেই তাণ্ডব চালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
কলকাতা শহরে দুষ্কৃতী দমনে বেশ কিছু নির্দেশ দিয়েছেন লালবাজারের কর্তারা। কিন্তু সেই সব নির্দেশ কতটা কার্যকর হচ্ছে, বৃহস্পতিবারের মধ্যরাত ফের তুলে দিল সেই প্রশ্ন।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই রাতে রাজাবাজার মোড়ে দু’দল দুষ্কৃতীর মারামারিতে দু’জন আহত হয়েছে। গুলিও চলেছে। আহত দু’জনের বিরুদ্ধেই পুলিশের খাতায় একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তাদের মধ্যে এক জন সম্প্রতি জেল থেকে বেরিয়েছে। এই ঘটনায় শুক্রবার মহম্মদ দানিশ নামে এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, আহতদের এক জনের নাম ইয়াসির মুস্তাফা। সে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। অন্য জন সাগির ওরফে চিনা একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দু’জনেই নারকেলডাঙার বাসিন্দা। এই ঘটনায় দানিশ ছাড়াও মাসুম ও গুল্লু নামে আরও দু’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। তাদের বিরুদ্ধেও ছিনতাই, লুট-সহ নানা অভিযোগ রয়েছে। দানিশ একাধিক বার জেলও খেটেছে বলে জানায় পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাত ১২টা নাগাদ মুস্তাফা ও চিনা রাজাবাজার মোড়ে বসে ছিল। সেই সময়ে মোটরবাইকে চেপে দানিশ ও তার বাকি দুই শাগরেদ সেখানে আসে। দু’পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। অভিযোগ, বচসা বাড়লে মারামারিও লাগে। তখন দানিশরা ভোজালি বার করে মুস্তাফাদের কোপায় বলে অভিযোগ। তার পরে দু’রাউন্ড গুলিও চালায়। তবে সেই গুলি কারও গায়ে লাগেনি। ভোজালির কোপ মারার পরে দানিশরা পালিয়ে যায়।
লালবাজারের একটি সূত্র জানাচ্ছে, মুস্তাফা এবং চিনাও দানিশের দলভুক্ত। নিজেদের মধ্যে কোনও গোলমালের জেরেই এই মারামারি। পূর্ব ও উত্তর কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই, লুটের মতো নানা অপকীর্তি করে বেড়ায় তারা। পুলিশের খাতায় ‘দাগি’ দুষ্কৃতী হিসেবেই চিহ্নিত।
শুক্রবার সকালে রাজাবাজার মোড়ে বসে থাকা স্থানীয় কয়েক জন ব্যবসায়ী ও বাসিন্দা অভিযোগ করেন, রাত বাড়লেই ওই এলাকায় দুষ্কৃতীদের আনাগোনা বাড়ে। এলাকার শান্তিভঙ্গও করে তারা। কিন্তু এলাকার মানুষ প্রতিবাদ করার সাহস পান না। ‘‘প্রতিবাদ করে কে নিজের বিপদ ডেকে আনবে?’’ প্রশ্ন এক বৃদ্ধ ব্যবসায়ীর।
পুলিশের দাবি, দানিশদের দলের প্রায় সবাইকেই পাকড়াও করা হয়েছিল। জামিনে ছাড়া পেয়ে ফের অশান্তি শুরু করেছে তারা। বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনায় খুনের চেষ্টা-সহ একাধিক জামিন-অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। পূর্ব ও উত্তর কলকাতার একাধিক থানা ও গোয়েন্দা বিভাগ নেমে বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ করছে।