নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (এন আর এস) সুপার সৌরভ চট্টোপাধ্যায় রবিবার দাবি করেছিলেন, বিভিন্ন ওয়ার্ডে কুকুরের উপদ্রব নিয়ে তাঁর কাছে কেউ কোনও অভিযোগ করেননি। তিনি বিষয়টি জানেন না। অথচ সৌরভবাবুই কুকুর-বেড়ালের দৌরাত্ম্য নিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারপার্সন, বিধায়ক স্মিতা বক্সীকে। ওই উপদ্রব ঠেকাতে কী করণীয়, তা নিয়ে তাঁর পরামর্শও চেয়েছিলেন।
মঙ্গলবার এই তথ্য সামনে এসেছে। যদিও স্মিতাদেবী দাবি করেছেন, রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারপার্সন হিসেবে তিনি কোনও চিঠি পাননি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুরসভার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। পুরসভা তার কাজ করেছে।
প্রসঙ্গত, রবিবার এন আর এস হাসপাতাল চত্বর থেকে উদ্ধার হয়েছিল ১৬টি কুকুরছানার দেহ। ময়না-তদন্তে জানা গিয়েছে, তাদের পিটিয়ে মারা হয়েছিল। সৌরভবাবু তাঁর চিঠিতে লিখেছিলেন, ‘খাবার ও আশ্রয়ের খোঁজে হাসপাতালের বিভিন্ন জায়গায় দিন-রাত ঘুরে বেড়াচ্ছে কুকুর-বেড়াল। খাবারের জন্য কখনও কখনও তারা ওয়ার্ডের ভিতরেও ঢুকে পড়ছে। এতে হাসপাতাল চত্বরে একাধিক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।’ সুপার আরও লিখেছিলেন, ‘হাসপাতালে ভর্তি থাকার সময়ে বহু রোগীকেই বেড়ালের কামড় খেতে হয়েছে।’ বিষয়টি জানতে এ দিন সৌরভবাবুর মোবাইলে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। এসএমএসেরও কোনও উত্তর আসেনি।
কুকুর-বেড়ালের দৌরাত্ম্য নিয়ে এন আর এসের সুপারের চিঠির প্রতিলিপি।
সৌরভবাবুর চিঠি সম্পর্কে স্মিতাদেবী বলেন, ‘‘যখন (হাসপাতাল) সাজানোর কাজ হচ্ছিল, তখন ওঁরা জানিয়েছিলেন। তার পরে ওঁরা চিঠি দিয়েছিলেন পুরসভাকে। ওটা তো আমার দায়িত্ব নয়। হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারপার্সন হিসাবে আমাকে কোনও চিঠি ওঁরা দেননি। আমার থেকে নিয়ম জানতে চেয়েছিলেন। সেটা আমি বলে দিয়েছিলাম।
পুরসভা তার কাজ করেছে। হাসপাতালের সুপারের সঙ্গে আমার মঙ্গলবার কথা হয়েছে। যখন পুরসভা কুকুর ধরতে যায়, তখন ধরতে দেওয়া হয় না।’’
হাসপাতাল চত্বর এবং ওয়ার্ডে কুকুর-বেড়াল আটকানোর জন্য কোনও নির্দেশিকা কি তৈরি করা সম্ভব? স্মিতাদেবীর বক্তব্য, ‘‘তা হলে তো বন দফতরে কথা বলতে হবে। আমরা কিছু বলতে পারব না। উচ্চ কর্তৃপক্ষ যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেবেন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘হাসপাতালের গেট ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে। কুকুর-বেড়াল ঢোকা কী ভাবে আটকানো সম্ভব? ওদের কি খাঁচা পেতে ধরতে হবে?’’