অভিযুক্ত: সোমা বর্মণ (উপরে) ও মৌটুসি মণ্ডল। ভিডিয়ো-চিত্র
নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কুকুরছানা হত্যার ঘটনা ঘটে রবিবার। শিয়ালদহ আদালতের বিচারক অভিযুক্ত দুই নার্সিং পড়ুয়াকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দেন বুধবার। কিন্তু জামিনের শর্ত পূরণ না-হওয়ায় বৃহস্পতিবারেও ওই দুই অভিযুক্ত জেল থেকে ছাড়া পাননি। তাঁদের শনাক্ত করার জন্য এ দিন জেলে টেস্ট আইডেন্টিফিকেশন (টিআই) প্যারেড করার কথা থাকলেও তা হয়নি।
ধৃত দুই অভিযুক্ত মৌটুসি মণ্ডল ও সোমা বর্মণের আইনজীবী দুলাল ভট্টাচার্য এ দিন জানান, শিয়ালদহ আদালত বুধবার নির্দেশ দিয়েছিল, অভিযুক্তদের বাবা অথবা মাকে তাঁদের নামে রাষ্ট্রায়ত্ত কোনও ব্যাঙ্ক অথবা ডাকঘর থেকে দু’হাজার টাকার সার্টিফিকেট কিনে আদালতে জমা দিতে হবে। আইনি
ভাষায় একে বলা হয় ‘লোকাল সিয়োরিটি’। বুধবার বিকেল পর্যন্ত ওই সার্টিফিকেট আদালতে জমা না-পড়ায় দুই অভিযুক্তকে আলিপুর মহিলা জেলে পাঠিয়ে দেন
বিচারক। বৃহস্পতিবারেও আদালতে ওই সার্টিফিকেট জমা পড়েনি। সার্টিফিকেট পেতে যে-সব নথির প্রয়োজন, তা অভিযুক্তদের বাবা-মায়ের কাছে ছিল না বলে জানিয়েছেন ওই আইনজীবী।
কিন্তু শনাক্তকরণ প্যারেড হল না কেন? পুলিশের বক্তব্য, কুকুরছানা হত্যার তিন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীর টিআই প্যারেডে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এ দিন তাঁরা প্যারে়ডে যোগ দিতে রাজি হননি। ফলে এক জন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে আলিপুর মহিলা জেলে ওই শনাক্তকরণ হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। পুলিশের তরফে ওই সাক্ষীদের সেখানে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সারা দিন চেষ্টা করেও পুলিশ তাঁদের সেখানে নিয়ে যেতে পারেনি বলে অভিযোগ।
পুলিশ জানায়, তারা আদালতে সব জানিয়েছে। আদালত যা নির্দেশ দেবে, তা-ই করা হবে। ওই তিন সাক্ষী দেখেছিলেন, দুই অভিযুক্ত মৌটুসি ও সোমা ১৬টি কুকুরছানাকে নৃশংস ভাবে পিটিয়ে মারছেন। এক পুলিশকর্তা জানান, শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন না-হলে তদন্ত ব্যাহত হতে পারে। তাই নতুন প্রত্যক্ষদর্শী জোগাড় করার চেষ্টা চালানো হবে।
লালবাজার সূত্রের খবর, ওই ঘটনার তদন্তে নীলরতন সরকার হাসপাতালের নার্সিং হস্টেলের কিছু ছাত্রীর নাম উঠে এসেছে। তাঁরা ওই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন অভিযোগ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের তরফে তাঁদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।