ফাইল চিত্র।
করোনা পরিস্থিতিতে কম খরচে দ্রুত যাতায়াতের সুবিধার জন্য অনেকেই বাইক ট্যাক্সি বেছে নিচ্ছেন। কিন্ত, পুজোর আগে থেকেই বাইক ট্যাক্সিতে যাত্রীদের হয়রানি চরমে উঠেছে বলে অভিযোগ। প্রায়ই অল্প দূরত্বে, কম ভাড়ার গন্তব্যের ক্ষেত্রে রাইড বাতিল করছেন চালকেরা। এ ক্ষেত্রে কোনও যাত্রী অ্যাপে রাইড বুক করার পরে ফোনে কথা বলার সময়ে চালকেরা গন্তব্য জেনে নিচ্ছেন। তার পরে কখনও কখনও অফলাইন হয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। ফলে ক্যাব সংস্থাও সব সময়ে ওই কারচুপি ধরতে পারছে না বলে অভিযোগ যাত্রীদের।
যাত্রীরা আরও অভিযোগ করছেন, আগে যে ভাবে ৫০-৬০ টাকা খরচ করে অনায়াসে সাত-আট কিলোমিটার দূরের গন্তব্যে পৌঁছনো যেত, এখন তা প্রায় করাই যায় না। সন্ধ্যা বা দিনের ব্যস্ত সময়ে যাত্রী প্রত্যাখ্যানের প্রবণতা বেশি দেখা যাচ্ছে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। এ ছাড়া, মোটরবাইকে হেলমেট বা স্যানিটাইজ়ার রাখা হলেও প্রায়ই যাত্রীদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত একাধিক বিধি মানা হয় না বলেও অভিযোগ উঠছে।
সূত্রের খবর, শহরের অধিকাংশ বাইক ট্যাক্সিই চলছে ব্যক্তিগত নম্বরের গাড়ি ব্যবহার করে। যদিও, বাইক ট্যাক্সি চালানোর জন্য বাণিজ্যিক নম্বরের গাড়ি ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু অভিযোগ, সরকারি আইনের ফাঁক গলে ব্যক্তিগত মোটরবাইক ব্যবহার করে পরিষেবা দেওয়ার কাজ চলছে। এর ফলে সফরের সময়ে কোনও যাত্রীর মৃত্যু হলে বা তিনি দুর্ঘটনায় আহত হলে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কোনও ব্যবস্থা থাকছে না। একটি বাইক যাত্রী বহনের উপযুক্ত কি না, তা যাচাই করার কোনও ব্যবস্থা না থাকায় বহু লজ্ঝড়ে মোটরবাইক এবং স্কুটিও পরিষেবা দেওয়ার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে অভিযোগ। অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাগুলির বিরুদ্ধেও অভিযোগ, কমিশন থেকে আয় বাড়াতে তারাও ব্যক্তিগত মালিকানাধীন মোটরবাইক যাত্রী পরিবহণের কাজে নথিভুক্ত করায় বাধা দিচ্ছে না।
আরও পড়ুন: অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ, ফের সৌমিত্রের শারীরিক অবস্থার অবনতি
আরও পড়ুন: লোকসভার ক্ষত সারাতে নদিয়ায় কোমর বাঁধছেন মহুয়ারা
ওয়েস্ট বেঙ্গল অনলাইন ক্যাব অপারেটর্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাগুলি চার চাকার ক্যাবের চালক নথিভুক্তকরণের ক্ষেত্রে যে সব সতর্কতা মেনে চলে, তার ছিটেফোঁটাও বাইক ট্যাক্সির ক্ষেত্রে চোখে পড়ে না।’’ বিভিন্ন ই-কমার্স সংস্থার পণ্য এবং বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রেও বাইকের ব্যবহার বাড়ছে। ওই সব ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক লাইসেন্স থাকা এখনও এ রাজ্যে বাধ্যতামূলক করা হয়নি। কিন্তু, বাইক ট্যাক্সিতে যাত্রী তোলার ক্ষেত্রে ওই লাইসেন্স থাকা বাধ্যতামূলক। রাস্তায় পুলিশ মাঝেমধ্যে ধরপাকড় চালালেও তা নিয়মিত নয় বলে অভিযোগ। ফলে নজরদারির ফাঁকফোকর গলেই চলছে পরিষেবা দেওয়ার কাজ। পরিবহণ দফতরের কর্তারাও মানছেন, অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাগুলি উপযুক্ত নজরদারি ছাড়াই বাইক ট্যাক্সির অনুমোদন দিচ্ছে। অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাগুলি অবশ্য এই অভিযোগ নিয়ে মুখ খুলতে চায়নি।