Women Forces

Women Police: আপাতত রাতের টহল নয়, কলকাতা পুলিশের নারী বাহিনী মুখ্যমন্ত্রীর যাত্রাপথের দায়িত্বে

নজরদারি ও ধরপাকড় চালানোর জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বাহিনীকে রাতের শহরের নজরদারি থেকে সরিয়ে এক জন ভিভিআইপি-র গতিবিধি দেখার কাজে লাগানো হল।

Advertisement

নীলোৎপল বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:৫৬
Share:

ফাইল চিত্র।

রাতপথে মহিলাদের নিরাপত্তায় নজরদারি চালিয়ে প্রথম থেকেই সব মহলের প্রশংসা কুড়িয়েছে কলকাতা পুলিশের বিশেষ মহিলা বাহিনী ‘উইনার্স’। এ বার ওই বাহিনী মুখ্যমন্ত্রীর যাত্রাপথের নিরাপত্তার দায়িত্ব পেয়ে কাজ শুরু করেছে। কলকাতা পুলিশ সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে। কলকাতার যে থানা এলাকা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যাচ্ছেন, সেখানকার নিরাপত্তার বন্দোবস্ত এবং মুখ্যমন্ত্রীর নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশিই রাখা হচ্ছে এই নারী বাহিনীকে। এ জন্য মহিলাদের নিরাপত্তার স্বার্থে রাতপথে তাঁদের টহলদারি আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

লালবাজারের গুন্ডা দমন শাখার মতো নজরদারি ও ধরপাকড় চালানোর জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এই বাহিনীকে হঠাৎ রাতের শহরের নজরদারি থেকে সরিয়ে এক জন ভিভিআইপি-র গতিবিধি দেখার কাজে লাগানো হল কেন? রাতে মহিলাদের নিরাপত্তা তা হলে সামলাবেন কারা?

এই বাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (এসটিএফ) অপরাজিতা রাই বলেন, “এটা লালবাজারের সিদ্ধান্ত।” লালবাজারের যুগ্ম কমিশনার পদমর্যাদার এক কর্তা যদিও বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী নিজে এই বাহিনীর কাজে খুব খুশি। সেই কারণেই এই বাহিনীকে আপাতত মুখ্যমন্ত্রীর পথের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এতে সমস্যার কিছু নেই। কলকাতা পুলিশের ‘শক্তি’ বাহিনী রয়েছে। যার সব সদস্যই মহিলা। এ ছাড়াও রয়েছে যে কোনও সশস্ত্র হামলার সঙ্গে লড়াইয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মহিলা বাহিনী ‘ওয়ারিয়র্স’।”

Advertisement

লালবাজার সূত্রে জানানো হয়েছে, গত ২৫ অগস্ট থেকে এই নতুন দায়িত্ব পেয়েছেন উইনার্স বাহিনীর সদস্যেরা। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আপাতত এমন ভাবেই চলার কথা। ৬ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রী শহরের বাইরে যেতে পারেন। তিনি ফিরে এলে ফের মুখ্যমন্ত্রীর পথের দায়িত্ব ফিরতে পারে উইনার্স বাহিনীর কাঁধে।

পুলিশের এক কর্তা জানান, মূলত কালীঘাট থেকে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর যাতায়াতের পথে রাখা হচ্ছে ওই বাহিনীকে। এ ছাড়া তিনি শহরের মধ্যে কোথাও গেলে সেই পথে বা শহরের বাইরে যাওয়ার হলে শহরের সীমানা পর্যন্ত সঙ্গ দিচ্ছে উইনার্স।

এই বাহিনীর এক সদস্য বলেন, “মূলত হেস্টিংস থেকে আলিপুর হয়ে যাতায়াতের পথে প্রতিটা বিটে আমাদের দু’জনকে রাখা হচ্ছে। প্রতিদিন আলিপুর থানার ওসি আমাদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিচ্ছেন। বুধবারও তেমন ভাবেই ডিউটি ছিল। পানাগড় থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সে দিন ফিরতে সন্ধ্যা ছ’টা বেজে গিয়েছিল। আমরা পথেই ছিলাম। রাস্তায় কেমন লোক রয়েছেন এবং মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্তটাই নজর করা ছিল আমাদের কাজ।”

বাহিনীর আর এক সদস্য জানান, বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী এসএসকেএম হাসপাতালে গিয়েছিলেন। ফলে তাঁদের ডিউটিও দেওয়া হয়েছিল সেই দিকে।

প্রসঙ্গত, রাজীব কুমার পুলিশ কমিশনার থাকাকালীন ২০১৮ সালের ১১ জুলাই আত্মপ্রকাশ ঘটে কলকাতা পুলিশের বিশেষ মহিলা বাহিনী উইনার্স-এর। মূলত সন্ধ্যায় এবং রাতের পথে মহিলাদের নিরাপত্তা দেখার জন্যই এই বাহিনীর জন্ম। বাছাই করা মহিলা

পুলিশকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয় ২০১৮-র মার্চ মাস থেকে পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে (পিটিএস)। মোটরবাইকে সওয়ার এই বাহিনী মার্শাল আর্টসের পাশাপাশি আধুনিক সব আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারেও রীতিমতো সিদ্ধহস্ত।

তিন জন অফিসারের পাশাপাশি এই মুহূর্তে বাহিনীতে রয়েছেন আরও ৩৩ জন মহিলা পুলিশকর্মী। গত তিন বছরে শহরের একাধিক জায়গায় হানা দিয়ে তিনশো জনেরও বেশি লোককে গ্রেফতার করেছেন বাহিনীর সদস্যেরা। হায়দরাবাদে এক তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনার পরে এই শহরের মহিলাদের রাতপথের নিরাপত্তায় বিশেষ অভিযান চালিয়েছিল এই বাহিনী। পুজোর সময়ে উইনার্সের কাজে খুশি হয়ে ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement