উৎসুক: তখন শুরু হয়েছে প্রাক্-পুজোর বিশেষ শোভাযাত্রা। রাস্তার ডিভাইডারে উঠে সে দিকেই নজর কচিকাঁচাদের। চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
একে সপ্তাহের মাঝে প্রাক্-পুজোর মিছিল, তার সঙ্গে বৃষ্টি। দুইয়ে মিলে বৃহস্পতিবার দিনভর ভোগান্তির শিকার হলেন পথে বেরোনো শহরবাসী। দক্ষিণ কলকাতায় পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও গাড়ির জটে দীর্ঘক্ষণ থমকে থাকল উত্তর এবং মধ্য কলকাতা। বেলায় পরিস্থিতি এমন হয় যে, থমকে থাকা গণপরিবহণ ছেড়ে হেঁটেই গন্তব্যে রওনা দেন অনেকে। এমন সব দিনের মতো এ দিনও মানুষকে খানিকটা স্বস্তি দিয়েছিল মেট্রো।
এ দিনের শোভাযাত্রা ঘিরে যানজটের হাল কী হবে, তা নিয়ে দিনকয়েক আগে থেকেই কার্যত ঘুম ছুটেছিল লালবাজারেরট্র্যাফিক কর্তাদের। ওই সময়ে যান চলাচলের জন্য একগুচ্ছ পরিকল্পনাও হয়। শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মিছিলের ভিড় সামলাতে নির্দিষ্ট করা হয় রাস্তা। তার পরেও ভোগান্তি আটকানো গেল না বলেই অভিযোগ। এ দিন পথে বেরিয়ে সকাল থেকেই নাকাল হলেন মানুষ। সকালে তবু কিছুটা স্বাভাবিক ছিল যান ব্যবস্থা। কিন্তু বেলা বাড়তেই পরিস্থিতি কার্যত হাতের বাইরেচলে যায়।
শোভাযাত্রার কারণে শহরের একাধিক রাস্তায় দাঁড়িয়ে যায় গাড়ি। যানজটে আটকে পড়ে অ্যাম্বুল্যান্সও। গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউ, বিবেকানন্দ রোড, এ পি সি রোড, রাজাবাজার মোড়, এ জে সি বসু রোড-সহ উত্তর এবং মধ্য কলকাতায় একাধিক রাস্তা ছিল একই রকম। সকালে উল্টোডাঙা থেকে কাজে বেরিয়েছিলেন অভিজিৎ সাহা। শ্যামবাজার পর্যন্ত আসতে পারলেও তার পরে থমকে যায় বাসের চাকা। বাস থেকে নেমে হাঁটতে হাঁটতে অভিজিৎ বলেন, ‘‘এ তো দেখছি দু’-একটা বাদে সমস্ত রাস্তা বন্ধ। বাস আর যাবে কোনদিক দিয়ে?’’
রেড রোড বন্ধ থাকায় হাওড়া স্টেশনে যেতেও হয়রান হতে হয় যাত্রীদের। যানজটের একই ছবি ছিল শিয়ালদহ সংলগ্ন এলাকায়ও। সকালেই এ জে সি বসু রোড ধরে গাড়ি এগিয়েছে ধীর গতিতে। বেলা গড়াতে চাকা থমকে যায়। অনেককেই দেখা গেল, শিয়ালদহে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে এস এন ব্যানার্জি রোড ধরতে। অনেকে আবার উল্টো পথে হেঁটে শিয়ালদহ স্টেশনে পৌঁছন।
এমনই এক যাত্রী বললেন, ‘‘বাস তো এগোচ্ছেই না। এক জায়গায় এত ক্ষণ আটকে থাকাটা খুব কষ্টকর।’’ এন আর এসের সামনে ট্র্যাফিক সামলাতে ব্যস্ত এক পুলিশকর্মী বলেন, ‘‘উত্তরের সব চাপ তো এই রাস্তায়। মিছিল শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই জট খোলার উপায় নেই।’’
ওই পুলিশকর্মী শোভাযাত্রার শেষে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার কথা বললেও, কার্যত তা হতে সন্ধ্যা হয়ে যায় বলেই সূত্রের খবর। তবে লালবাজারের এক পুলিশকর্তার দাবি, ‘‘যান সামলাতে আগেই অতিরিক্ত পুলিশ রাস্তায় নামানো হয়েছিল। ফলে পরিস্থিতি অনেকটা সামলানো গিয়েছে। কিছু অংশে যানজট ছিল। তবে মিছিল শেষ হতেই তা স্বাভাবিক হয়েছে।’’