উত্তর দমদম পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
কোষাগারের এমনই হাল যে, মাসে দুই কিস্তিতে বেতন দেওয়া হচ্ছে। উন্নয়নমূলক কোনও কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। পর্যাপ্ত অর্থের অভাবে এমনই অবস্থা উত্তর দমদম পুরসভার। এ থেকে মুক্তি পেতে আয় বৃদ্ধির পথ খুঁজছে পুরসভা। কর আদায়ে জোর দেওয়ার পাশাপাশি যে সমস্ত বাড়ি বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে, সেগুলি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে কোমর বেঁধে নামবে বলে দাবি পুরসভার। পুর বোর্ডের আরও দাবি, তারা দায়িত্ব নেওয়ার পরে কর আদায়ে আগের তুলনায় গতি এসেছে। তবে, এখনও কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তিকর বকেয়া।
পুরসভা সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরে সম্পত্তিকর কাঠামোর পরিবর্তন হয়নি। তার উপরে বহু বসত বাড়িই আজকাল বিভিন্ন বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। অথচ, সে ব্যাপারে পুরসভার রেকর্ডে তথ্য বিশেষ নেই। তথ্য থাকলেও দেখা যাচ্ছে, বসত বাড়ি বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করলে যে রাজস্ব হয়, তার তুলনায় অনেকটাই কম পরিমাণ কর ধার্য করা হচ্ছে। তাই কর কাঠামোর পুনর্মূল্যায়নের জন্য বাড়ি বাড়ি ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে বকেয়া কর আদায়ের কাজও শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুরসভা। এক পুরকর্তা জানান, ঠিক মতো আদায় করা গেলে কোষাগারের হাল অনেকটাই ফিরবে।
প্রশ্ন উঠেছে, বকেয়া রাজস্ব আদায়ে এত দিন কেন সচেষ্ট হয়নি পুরসভা? বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, প্রাচীন ওই জনপদে অনেক ধরনের পরিবর্তন ঘটছে। পুরসভাকে নিয়মিত সে ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে হবে। তাঁদের বক্তব্য, নিয়মিত সময় অন্তর করের পুনর্মূল্যায়ন এবং আদায়ের কাজ হলে বাসিন্দাদের উপরেও চাপ কমে। সে ব্যাপারে পুরসভার গাফিলতি রয়েছে। অভিযোগ অবশ্য পুরোপুরি মানতে নারাজ পুর কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, চেষ্টা হয়নি, এমন নয়। কিছু ক্ষেত্রে জটিলতা থেকে গিয়েছে। যেমন, বাড়ির মালিকের মৃত্যুর পরে তাঁর সন্তানদের মধ্যে বাড়ি ভাগ হয়েছে। কিন্তু পুরসভার কাছে পুরনো তথ্য রয়ে গিয়েছে। পরিমার্জন হয়নি। ফলে সম্পত্তিকর আদায় করা যায়নি।
উত্তর দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাস জানান, একাধিক জটিলতার কারণে বকেয়া সম্পত্তিকর আদায় করা সম্ভব হয়নি। সেই জটিলতা কাটানো হচ্ছে।