দু’বছরের বেশি সময় কেটে গেলেও এখনও বন্ধ ট্রামের এসপ্লানেড-খিদিরপুর রুট। ফাইল চিত্র।
আমপানের পরে দু’বছরের বেশি সময় কেটে গেলেও এখনও বন্ধ ট্রামের এসপ্লানেড-খিদিরপুর রুট। ময়দানের সবুজ ছুঁয়ে, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের পাশ দিয়ে ছুটে যাওয়া ৩৬ নম্বর ট্রামের ওই রুট দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বৈদ্যুতিক ট্রামের অন্যতম প্রাচীন পথ।
শহরের বেশির ভাগ এলাকায় ট্রামলাইন রাস্তার মাঝখানে তুলে আনায় ওঠানামার ক্ষেত্রে তৈরি হয়েছে প্রবল অসুবিধা। যার জেরে যাত্রী-সংখ্যা আগের তুলনায় কমেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও খিদিরপুরের ওই রুটে বছর দুই আগেও দৈনিক ছয় থেকে সাত হাজার যাত্রী হত। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ওই রুট পুনরায় সচল করার দাবিতে একাধিক বার পথে নেমেছে শহরের ট্রামপ্রেমী সংগঠন। পুজোর আগে ওই রুট চালু করা হবে বলে মাস তিনেক আগে পরিবহণ দফতরের পক্ষ থেকে জানানোও হয়েছিল। কিন্তু পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, মেরামতির কাজ করার জন্য পরিকল্পনা খাতের বাৎসরিক বরাদ্দের একটি কিস্তিও জোটেনি ট্রাম কোম্পানির ভাগ্যে। পুজোর আগে তা এসে পৌঁছবে কি না, তা-ও নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকেরা। ফলে, পুজোর আগে ওই রুট সচল করা নিয়ে সংশয় বেড়েছে।
এর আগে কয়েক দফায় বৈদ্যুতিক তারের খুঁটি মেরামতি ও লাইন পরিচ্ছন্ন করার কাজ এগোলেও পরে তা টাকার অভাবে বন্ধ করে দিতে হয়। ঝড়ে ছিঁড়ে যাওয়া ওভারহেড তার পাল্টানোর টাকা না মেলার কারণেই ওই রুট সচল করা যাচ্ছে না বলে পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর। রুট বন্ধ থাকায় খিদিরপুর ডিপোর ভিতরে পড়ে থাকা ট্রামগুলির অবস্থাও প্রতিদিন খারাপ হচ্ছে। অতীতে খিদিরপুর হয়ে ওই রুট কালীঘাট সেতু পার করে টালিগঞ্জ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। কিন্তু কালীঘাট সেতুর স্বাস্থ্যের যুক্তি দেখিয়ে সেখানে হাইট বার বসানোয় ওই রুটে টালিগঞ্জ পর্যন্ত ট্রাম চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ওই রুট চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ না হওয়ায় হতাশ এবং ক্ষুব্ধ স্থানীয় যাত্রী-সহ ট্রামপ্রেমী সংগঠনের সদস্যেরা।
‘কলকাতা ট্রাম ইউজ়ার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর পক্ষ থেকে শনিবার দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পুজোর আগে ওই রুট সচল করা হবে বলে আমরা পরিবহণ দফতরের কাছ থেকে আশ্বাস পেয়েছিলাম। এখন ওই কাজ না হলে তা খুবই দুর্ভাগ্যজনক হবে। এখনও পুজোর এক মাস দেরি। পরিবহণ দফতর বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে বলে আশা করছি।’’
বাসের জ্বালানি কেনা নিয়ে আর্থিক সঙ্কটের মুখে কেন তুলনামূলক ভাবে সস্তা ও পরিবেশবান্ধব ট্রামকে ব্যবহার করা হচ্ছে না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন ট্রামপ্রেমী সংগঠনের সদস্যেরা।