অভিযুক্তেরা অধরাই, হুমকি প্রতিবেশীকেও

পুলিশের দাবি, প্রফুল্ল পার্কের ওই ক্লাব শনিবার রাতে সন্দীপবাবুর স্ত্রী ছন্দা চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তাদের এক সদস্যকে চড় মারার পাল্টা অভিযোগ দায়ের করে। ফলে দু’পক্ষের কথা শুনতে তাঁদের থানায় ডেকে পাঠানো হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৮ ০১:১১
Share:

অভিযোগপত্র হাতে পার্থ সেন। রবিবার, রিজেন্ট পার্কে। নিজস্ব চিত্র

ঘটনার পরে কেটে গিয়েছে দু’দিন। রিজেন্ট পার্কের কালীতলার বাসিন্দা, ক্যানসার আক্রান্ত সন্দীপ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর পরিবারের লোকজনকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত ক্লাবের সদস্যদের এখনও গ্রেফতারই করতে পারল না পুলিশ। উল্টে থানায় কথা বলার জন্য তাঁদের নোটিস দিয়ে ডেকে পাঠানো হয়েছে। এখনও অভিযুক্তেরা ধরা না পড়ায় প্রশ্ন উঠে গিয়েছে পুলিশের ভূমিকা নিয়েই।

Advertisement

পুলিশের দাবি, প্রফুল্ল পার্কের ওই ক্লাব শনিবার রাতে সন্দীপবাবুর স্ত্রী ছন্দা চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তাদের এক সদস্যকে চড় মারার পাল্টা অভিযোগ দায়ের করে। ফলে দু’পক্ষের কথা শুনতে তাঁদের থানায় ডেকে পাঠানো হয়। সন্দীপবাবুর বাড়ির লোক অবশ্য রবিবার জানিয়ে দিয়েছেন, পুলিশ এখনও তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি বা কথা বলার জন্য থানায় ডাকেনি। যদিও আক্রান্ত ব্যক্তির পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন যিনি, সেই ক্লাব-সদস্য পার্থ সেনকে থানায় ডেকেছে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধেও অভিযুক্ত ক্লাবের সদস্যেরা পাল্টা অভিযোগ করেছেন।

এ দিকে, শুক্রবার রাতের ওই ঘটনা কেন পুলিশকে জানানো হয়েছে, তা নিয়ে প্রফুল্ল পার্ক ক্লাবের এক সদস্য রবিবার পার্থবাবুকে হুমকি দেন বলে অভিযোগ। পার্থবাবু বলেন, ‘‘দুপুর দেড়টা নাগাদ বিশ্ব হালদার নামে ওই ক্লাবের এক জন এসে আমাকে হুমকি দেয়। বলে গিয়েছে, পুলিশে অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হবে না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ওই যুবক হুমকি দিয়ে যাওয়ার পরেই তদন্তকারী অফিসারকে ফোন করি। তিনি উল্টে বলেন, সামান্য ব্যাপার। পুজোর বিসর্জনে এমন একটু-আধটু বাজি ফাটে। এ নিয়ে চুপ করে থাকাই ভাল!’’ পার্থবাবুর প্রশ্ন, পুলিশই যদি অভিযুক্তদের আড়াল করতে এ সব কথা বলে, তা হলে তারাই বা কেন অভিযোগ জানাতে বলে?

Advertisement

পুলিশের এমন ভূমিকায় আতঙ্কিত সন্দীপবাবুর পরিজনেরাও। এ দিন সন্দীপবাবুর এক ছেলে বলেন, ‘‘পুলিশ আমাদের ফোন করেনি, পাশেও দাঁড়ায়নি। বরং যিনি পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, সেই পার্থবাবুকে ফের প্রফুল্ল পার্কের ক্লাবের এক সদস্য হুমকি দিয়ে গিয়েছে। এতে আমরা আতঙ্কিত।’’ প্রশ্ন উঠেছে, তারস্বরে মাইক বাজানো এবং বাজি ফাটানোর অভিযোগ পেয়েও পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করল না কেন? পুলিশ সূত্রে খবর, প্রফুল্ল পার্কের ওই ক্লাব-সদস্যদের এক জনকে মারধর করা হয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ফলে ওই রাতে কী ঘটেছিল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। কিন্তু বাজি ফাটানো বা জোরে মাইক বাজানোর অভিযোগে তো ওই যুবকদের গ্রেফতার করা যেতে পারত? উত্তর মেলেনি পুলিশের কাছে।

অভিযোগ, শুক্রবার রাতে প্রফুল্ল পার্ক এলাকার একটি ক্লাবের সদস্যেরা জোরে মাইক বাজানোর পাশাপাশি বাজি ফাটাতে ফাটাতে কালীতলার একটি পুকুরে প্রতিমা বিসর্জন দিতে আসছিলেন। তাঁদের জোরে মাইক বাজাতে এবং বাজি ফাটাতে বারণ করেন সন্দীপবাবুর স্ত্রী ছন্দাদেবী। কিন্তু অভিযোগ, ওই যুবকেরা তাতে কান দেননি। বরং আরও জোরে বাজি ফাটাতে শুরু করেন। প্রথমে সন্দীপবাবুর দুই ছেলে এবং পরে সন্দীপবাবু নিজে ঘটনার প্রতিবাদ করলে অভিযুক্তেরা তাঁদের উপরে চড়াও হন বলে অভিযোগ। আক্রান্ত ওই ব্যক্তি এবং তাঁর পরিবারের লোকজনকে বাঁচাতে এলে ক্লাব-সদস্য পার্থ সেনের পা লক্ষ্য করে ইট ছোড়ার অভিযোগও ওঠে প্রফুল্ল পার্ক ক্লাবের সদস্যদের কয়েক জনের বিরুদ্ধে। রাতেই থানায় যান আক্রান্তেরা। কিন্তু পরে ওই ক্লাবের সদস্যেরা সন্দীপবাবুদের নামেই পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement