শহরে বৈধ পার্কিংয়ের নয়া প্রযুক্তি। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
সরু রাস্তার দু’ধারে সার দিয়ে গাড়ি দাঁড় করানো। মাঝের ফাঁকা অংশ দিয়ে কোনও মতে একটা ছোট গাড়ি যেতে পারলেও উল্টো দিক থেকে গাড়ি ঢুকলেই সমস্যা। প্রতিদিন নির্ঝঞ্ঝাটে গাড়ি নিয়ে বাড়ির সামনের গলি থেকে বেরিয়ে বড় রাস্তায় ওঠাই দুঃসাধ্য স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে!
পার্ক সার্কাস এলাকার পাশাপাশি এমন অবৈধ পার্কিংয়ের ছবি শহরের সর্বত্র। অভিযোগ, পুলিশকে বার বার জানানো সত্ত্বেও পরিস্থিতির বদল হয় না। ফলে কার্যত বেলাগাম অবৈধ পার্কিংয়ের জোর-জুলুম। পার্কিং ঘিরে বেআইনি আর্থিক লেনদেন আটকাতে সম্প্রতি নগদহীন পদ্ধতিতে ফি জমা নেওয়ার পরীক্ষামূলক সূচনা করেছে কলকাতা পুরসভা। তারা জানিয়েছে, পার্কিং ফি আদায় ঘিরে ওঠা অনিয়মের একাধিক অভিযোগের সুরাহায় এই উদ্যোগ। পার্কিংয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত একাধিক সংস্থার হাতে অনলাইনে টাকা মেটানোর যন্ত্রও তুলে দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু এই নয়া ব্যবস্থায় বেআইনি লেনদেন আটকানো গেলেও যত্রতত্র গজিয়ে ওঠা বেআইনি পার্কিং আদৌ আটকানো যাবে কি? প্রশ্নটা থাকছেই। বিশেষত, যে সব বাণিজ্যিক এলাকায় মালবাহী গাড়ি অবৈধ ভাবে দাঁড়িয়ে থাকে, সেগুলি আটকানো যাবে কি না, তা নিয়ে ধন্দে পুর আধিকারিকদের একাংশ। এক মেয়র পারিষদের কথায়, ‘‘সদ্য চালু হয়েছে নগদহীন পদ্ধতিতে পার্কিং ফি দেওয়ার ব্যবস্থা। এতে বেআইনি লেনদেন ঠেকানো যাবে। তবে যত্রতত্র পার্কিং আটকানো যাবে কি না, তা নিশ্চিত ভাবে বলা সম্ভব নয়। এর জন্য পুলিশকেই কড়া হতে হবে।’’
বড়বাজার, বি বা দী বাগ, পার্ক সার্কাস, কসবা, পার্ক স্ট্রিট, উল্টোডাঙা-সহ একাধিক জায়গায় অবৈধ পার্কিংয়ের রমরমা। এমনকি বহু স্কুলের সামনে সেই দাপট এতটাই যে, স্কুলবাস দাঁড়াতেও বেগ পেতে হয়। অভিযোগ, কোথাও পুলিশের মদতে, কোথাও পুলিশের নজর এড়িয়ে চলে যত্রতত্র গাড়ি রাখা।
শহরের বহু রাস্তায় যানজটের অন্যতম কারণও অবৈধ পার্কিং। মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বলছেন, ‘‘বেআইনি পার্কিং বন্ধ করার দায়িত্ব পুলিশের। তবে বৈধ পার্কিং এলাকায় নির্দিষ্ট সংখ্যার বেশি গাড়ি রাখলেই নতুন প্রযুক্তিতে তা ধরা পড়বে। এরপরেও যিনি অবৈধ ভাবে গাড়ি রাখবেন, তিনি নিজের দায়িত্বে তা রাখবেন।’’ কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তার দাবি, ‘‘গাড়ির সংখ্যা গত কয়েক বছরে বেড়েছে। অবৈধ পার্কিং রুখতে শহরের ডিভিশন ধরে এলাকা চিহ্নিত করে ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।’’