Durga Puja 2022

Durga Puja 2022: বেসরকারি ক্ষেত্রে ছুটি কই? পুজোর মিছিল নিয়ে দায় ঠেলাঠেলি

দুর্গাপুজোর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি তুলে ধরতে আগামী পয়লা সেপ্টেম্বর রাজ্য জুড়ে পদযাত্রা হবে বলে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২২ ০৬:৩২
Share:

দায় ঠেলাঠেলি শুরু হয়েছে গোটা বিষয়টা নিয়ে। ফাইল ছবি

দুর্গাপুজোর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি তুলে ধরতে আগামী পয়লা সেপ্টেম্বর রাজ্য জুড়ে পদযাত্রা হবে বলে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই দিন সরকারি অফিসে দুপুর ১টার মধ্যে ছুটি দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। কিন্তু সরকারি অফিসে এমন হতে পারলেও বেসরকারি ক্ষেত্রে কী হবে? পুজোকর্তা থেকে শুরু করে পুজো কমিটির সদস্য— বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত অনেকের মনেই এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে এখন। সেই সঙ্গে হঠাৎ করে ছুটি মিলবে কি না, তা ভেবেও তাঁরা চিন্তিত। পরিস্থিতি যা, তাতে কেউ এখনই ছুটির আবেদন করে একটা সুযোগ নিয়ে দেখতে চাইছেন। কেউ আবার ছুটি পাবেন না ধরে নিয়েই পুজো কমিটির অন্য সদস্য এবং সরকারি কর্মচারীদের ব্যাপারটা দেখে নিতে বলছেন। স্বাভাবিক ভাবেই পুজো কমিটির সদস্যদের মধ্যে ভাল রকম দায় ঠেলাঠেলি শুরু হয়েছে গোটা বিষয়টা নিয়ে।

Advertisement

বাগবাজার সর্বজনীন দুর্গোৎসব ও প্রদর্শনীর পুজোকর্তা, পেশায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্মী গৌতম নিয়োগী বললেন, ‘‘আমাদের তো আর এই ভাবে ছুটি হয় না। কী করব বুঝতে পারছি না। আবার এমন ঐতিহাসিক মিছিলে না থাকতে পারাটাও নিজের জন্য ক্ষতি। আবেদন করে একটা ছুটি নেওয়ার চেষ্টা করছি।’’ হাতিবাগান চত্বরের একটি পুজো কমিটির এক কর্তা আবার দাবি করলেন, ‘‘সদ্য ভোটে জিতে আমরা কয়েক জন পুজো করার ভার পেয়েছি। অধিকাংশই বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করি। শেষ পর্যন্ত মিছিলে থাকতে না পেরে পুজোটাই না হাতছাড়া হয়ে যায়!’’

শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের পুজোকর্তা দিব্যেন্দু গোস্বামী আবার বললেন, ‘‘হঠাৎ করে ছুটি কোনও বেসরকারি সংস্থাতেই পাওয়া যায় না। এমন ছুটির জন্য বেশির ভাগ জায়গায় কর্মীদের টাকা কাটা যায়। ফলে ওই দিন ছুটি নিয়ে মিছিলে আসা অনেকের পক্ষেই সমস্যার।’’ সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘আমি যে চাকরি করি, তাতে অন্য সময়ে কাজ করে দেওয়ার সুযোগ আছে। কিন্তু যাঁরা তা পারবেন না, তাঁদের অন্য সরকারি কর্মী-বন্ধুদের উপরেই ভরসা করতে হবে।’’ সমাজসেবী সঙ্ঘের পুজোকর্তা অরিজিৎ মৈত্র বলেন, ‘‘বেসরকারি সংস্থায় কাজ করা ক্লাবের সদস্যদের অনেকেরই ফোন পাচ্ছি। বেশির ভাগই জানাচ্ছেন, কী ভাবে মিছিলে যাবেন বুঝতে পারছেন না।’’ বালিগঞ্জ কালচারালের পুজো উদ্যোক্তা অঞ্জন উকিল আবার দাবি করলেন, ‘‘আমি আর্কিটেক্ট। নিজস্ব সংস্থা আছে। আমি ছুটি নিতে পারলেও সংস্থার ক’জনকে আচমকা ছুটি দিতে পারব জানি না।’’

Advertisement

মুচিবাজারের কবিরাজবাগান দুর্গাপুজো কমিটির অন্যতম সদস্য নিখিল ঘোষের কথায়, ‘‘আমি একটি টেলিফোন পরিষেবা সংস্থায় কাজ করি। সোমবার সন্ধ্যায় পুজোর মিছিলের ছুটি চাওয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তরফে চাকরি ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে। দরকারে চাকরি ছেড়েই মিছিলে যাব।’’ ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’-এর সম্পাদক তথা হাতিবাগান সর্বজনীনের পুজো উদ্যোক্তা শাশ্বত বসু জানালেন, ছুটির সমস্যা নিয়ে ভাবিত তাঁরাও। তাঁর কথায়, ‘‘দুপুরে মিছিল হওয়ার কথা। কোনওভাবেই সকলকে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা মাথায় আসছে না। কলকাতা পুলিশের ডিসি (সদর)-র সঙ্গে কথা বলেছি। মিছিলের গতিপথও ঠিক করা যায়নি। তবে আমার মনে হয়, সমস্যা নিয়ে হলেও যাঁরা মিছিলে আসার, তাঁরা ঠিকই আসবেন।’’

হিন্দুস্থান পার্কের পুজো উদ্যোক্তা সুতপা দাস বললেন, ‘‘আমার স্বামী ডাক্তার। পাশাপাশি পুজোতেও যুক্ত। অন্য দিন হলে কিছুতেই পারতেন না। বৃহস্পতিবার ওঁর বয়স্ক রোগীদের ‘হাউস কল’ থাকে। এ ক্ষেত্রে নিজের মতো সময় ঠিক করা যায় বলে হয়তো মিছিলে যেতে পারবেন। কিন্তু বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন, আমাদের ক্লাবের এমন বহু সদস্য যেতে পারবেন না। সকলের জন্য ভেবে একটা দিন ঠিক হলে ভাল হত।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement