দীপাবলিতে বন্ধ হচ্ছে না কলকাতায় বাজি বিক্রি

দিল্লিতে সব রকমের বাজি বিক্রি বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। মুম্বই বাজি বিক্রি নিষিদ্ধ হয়েছে মুম্বই হাইকোর্টের নির্দেশে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৭ ০০:০০
Share:

ফাইল চিত্র।

যে যা-ই বলুক না কেন, দিল্লি-মুম্বইয়ের মতো দীপাবলিতে বাজি বিক্রি নিষিদ্ধ করার পথে হাঁটছে না পশ্চিমবঙ্গ। এমনকী পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট যে ভাবে পঞ্জাব, চন্ডীগড় ও হরিয়ানায় বাজি ফাটানোর জন্য তিন ঘণ্টার (সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা থেকে সাড়ে ন’টা) সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে, তা-ও মানতে রাজি নয় তারা।

Advertisement

দিল্লিতে সব রকমের বাজি বিক্রি বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। মুম্বই বাজি বিক্রি নিষিদ্ধ হয়েছে মুম্বই হাইকোর্টের নির্দেশে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ কেন অন্য রাজ্যে প্রযুক্ত হবে না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন পরিবেশবিদেরা।

এমতাবস্থায় শুক্রবার কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের একটা আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের রায় দিল্লি কেন্দ্রিক। অন্য রাজ্যের ক্ষেত্রে এটা বাধ্যতামূলক না হলেও এই পদক্ষেপকে তারা অনুসরণ করতেই পারে।

Advertisement

কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রীর এ দিনের এই মন্তব্যে রাজ্যের পরিবেশবিদরা উৎসাহিত হলেও, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কিন্তু কোনও হেলদোল নেই। তারা জানিয়ে দিয়েছে, ৯০ ডেসিবেলের বেশি শব্দের বাজি নিষিদ্ধ করার যে আইন রয়েছে সেটাই দীপাবলিতে প্রযুক্ত হবে রাজ্যে। বাজি বিক্রি যেমন চলার চলছে।

মেয়র তথা রাজ্যের পরিবেশমন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ শুধু মাত্র দিল্লির জন্য। আমাদের এখানে শব্দের মাত্রা ৯০ ডেসিবেলই থাকছে। আগামী সোমবার শব্দবাজির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে। তার পরেই এবার কী ভাবে বাজি নিয়ন্ত্রণ হবে তা ঠিক করবে রাজ্য সরকার। রাজ্য পরিবেশ দফতর সূত্রে বলা হয়েছে, রাত ১০ টার পরে শব্দ বাজি ফাটানো নিষিদ্ধ। যদিও অন্য বাজি ফাটানো চলবে।

এ রাজ্যের বাজি ব্যবসায়ীরা অবশ্য কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রীর ওই মন্তব্যের কোনও যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছেন না। বাজি ব্যবসার সঙ্গে ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে যুক্ত শুভঙ্কর মান্নার মন্তব্য, ‘‘হঠাৎ করে সব বাজি বিক্রি নিষিদ্ধ করলে তা মানুষের ভাবাবেগে আঘাত করবে এবং এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত কয়েক লক্ষ পরিবার চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়বেন।’’

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মাথায় হাত দিল্লির বাজি ব্যবসায়ীদের। শেষ চেষ্টা হিসেবে দীপাবলির এক বা দু’দিন আগে বাজি বিক্রির অনুমতি চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন। সুপ্রিম কোর্ট কিন্তু তাদের আগের নির্দেশ বলবৎ রেখে জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞাটি শিথিল করা হলে যে উদ্দেশ্য নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট এই রায়টি দিয়েছে, তা ব্যর্থ হবে। ৯ অক্টোবরের আগে যাঁরা বাজি কিনে ফেলেছেন, শুধুমাত্র তাঁরাই দিল্লিতে বাজি পোড়াতে পারবেন বলে সুপ্রিম কোর্ট এ দিন পরিষ্কার করে দিয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে অনেকেই ‘হিন্দু বিরোধী’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন। সরব হয়েছিলেন চেতন ভগত থেকে বীরেন্দ্র সহবাগ। মুখ খুলেছিলেন ত্রিপুরার রাজ্যপাল তথাগত রায়ও। দিল্লির বাজি ব্যবসায়ীরা এ দিন সুপ্রিম কোর্ট আক্ষেপের সঙ্গে বলেছে, এই নির্দেশে সাম্প্রদায়িক ও রাজনৈতিক রং লাগানোর চেষ্টা করা হয়েছে। এতে ব্যথিত আদালত।

এর মধ্যেই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী হর্ষবর্ধন প্রস্তাব দিয়েছেন, ‘‘বিজ্ঞানী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে বৈঠকের আয়োজন করাতে হবে। সেখানে পুরনো বাজিগুলিকেই অন্য রকম ভাবে বানানো হোক। যাতে দূষণ কম হয় আবার আনন্দও হয়।’’ দিল্লির বাজি ব্যবসায়ীরা এ দিন হর্ষবর্ধনের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement