গত এক মাসে বহুতলের খোলা বারান্দা কিংবা জানলা দিয়ে পড়ে তিনটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। প্রতীকী ছবি।
নিউ টাউনে গত এক মাসে বহুতলের খোলা বারান্দা কিংবা জানলা দিয়ে পড়ে তিনটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। মর্মান্তিক এমন দুর্ঘটনা এড়াতে ‘নিউ টাউন-কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’ (এনকেডিএ) বাসিন্দাদের জন্য পরামর্শ-নির্দেশিকা জারি করতে চলেছে। যা দ্রুত আবাসিক সংগঠনগুলিকে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
গত ১১ এপ্রিল এক মহিলা একটি বহুতলের বারান্দা থেকে ফুল পাড়তে গিয়ে নীচে পড়ে মারা যান। গত বুধবার বিকেলে চিনার পার্কের কাছে একটি বহুতলের পাঁচতলার প্রায় উন্মুক্ত বারান্দা থেকে খেলতে খেলতে নীচে পড়ে মৃত্যু হয় দু’বছরের এক শিশুর। বৃহস্পতিবার সকালে আর একটি ঘটনায় চোদ্দোতলা আবাসনে নিজেদের ফ্ল্যাটের শোয়ার ঘরের খোলা জানলা থেকে ‘ঝাঁপ’ দিয়ে মারা যান এক যুবক।
এনকেডিএ-র এক শীর্ষ আধিকারিক জানান, পরামর্শ-নির্দেশিকার তালিকায় উপরের দিকেই থাকবে জানলা কিংবা বারান্দা গ্রিল দিয়ে ঘিরে রাখার কথা। সেই সঙ্গে জানলা ও লোহার গ্রিলে ‘চাইল্ড লক’ লাগাতেও অনুরোধ করা হবে। শিশুদের হাতে তার চাবি যাতে কোনও ভাবেই না পৌঁছয়, তা-ও দেখতে বলা হবে। আবাসনের লিফ্টে, দেওয়ালে এই ধরনের পরামর্শ-নির্দেশিকা ঝুলিয়ে রাখার চিন্তাভাবনাও করা হচ্ছে, যাতে সব সময়ে তা আবাসিকদের নজরে পড়ে। ওই আধিকারিকের কথায়, ‘‘নিরাপত্তার স্বার্থে এই সমস্ত পরামর্শ-নির্দেশিকা দেওয়া হবে। এর পরে আবাসিকদের নিয়ে এ বিষয়ে কর্মশালাও করা হবে। তবে, সবার আগে আবাসিকদের নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে সচেতন হতে হবে।’’
নিউ টাউনের বাসিন্দাদের সমাজমাধ্যম পেজেও এ নিয়ে শুক্রবার দিনভর আলোচনা চলেছে। আবাসিকদের একটি সংগঠন ‘নিউ টাউন ফোরাম অ্যান্ড নিউজ়’-এর চেয়ারম্যান সমরেশ দাস এ দিন বলেন, ‘‘আমরা আবাসিকদের ইতিমধ্যেই সতর্ক করার কাজ শুরু করেছি। এনকেডিএ-র পরামর্শ-নির্দেশিকার জন্য অপেক্ষা করছি। প্রকৃতির শোভা দেখতে গিয়ে বারান্দায় বা ঘরের জানলায় গ্রিল না বসানোর এই অভ্যাস বন্ধ হওয়া উচিত। যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমরা অনেকেই চাইছি, আবাসনগুলির ছাদের দরজার চাবিও যেন নিরাপত্তাকর্মীদের কাছেই থাকে। যাতে যে কেউ যখন খুশি ছাদে উঠে গিয়ে বড়সড় কোনও বিপদের সম্মুখীন না হন।’’