অভিনব: বিশ্ব পরিবেশ দিবসে দৌড়ের সঙ্গে আবর্জনা কুড়োনোর প্রতিযোগিতা। নিউ টাউনে। নিজস্ব চিত্র
স্রেফ গতানুগতিক প্রাতর্ভ্রমণ, দৌড়নো কিংবা শারীরিক কসরত নয়। ছুটতে ছুটতে পথের ধারে চারপাশে পড়ে থাকা প্লাস্টিক এবং অন্যান্য আবর্জনা তুলে নির্দিষ্ট জায়গায় জমা করা। বিদেশে এমন ছবি আগেই দেখা গিয়েছে। এ রাজ্যে এমন চিন্তাভাবনা শুরু হলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন ঘটেনি। পরিবেশ দিবসে সেই ছবি দেখা গেল নিউ টাউনের ইকো পার্কে। বুধবার সকালে নানা বয়সের অসংখ্য মানুষ, নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (এনকেডিএ) আয়োজনে ওই কর্মসূচিতে অংশ নেন।
এনকেডিএ সূত্রের খবর, মোট ১৪৩টি দলে ভাগ হয়ে গিয়েছিলেন অংশগ্রহণকারীরা। জগিং করতে করতে পথের ধারে পড়ে থাকা আবর্জনা কুড়িয়ে নেন সকলে। তার পরে তা জমা করা হয় নির্দিষ্ট একটি জায়গায়। পোশাকি ভাষায় যাকে বলা হচ্ছে ‘প্লগিং’।
এ দিন সকালে ইকো পার্কে ২ নম্বর গেট থেকে আইফেল টাওয়ার এলাকা পর্যন্ত ওই দৌড় এবং আবর্জনা কুড়িয়ে নেওয়ার অভিনব প্রতিযোগিতা হয়। এনকেডিএ সূত্রের খবর, যে দল প্রথম হয়েছে, তারা প্রায় সাড়ে আট কেজি আবর্জনা সংগ্রহ করেছে।
স্বল্প এবং দীর্ঘ দূরত্বে ভাগ করে দু’ভাগে প্রতিযোগিতা হয়। সফল প্রতিযোগী এবং যাঁরা নিয়মিত পার্ক পরিষ্কার রাখেন, তাঁদের পুরস্কৃত করা হয়। নিউ টাউন ও পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে এই অনুষ্ঠানে অসংখ্য মানুষ যোগ দিয়েছিলেন।
কারও কারও মতে, এটিও এক ধরনের শারীরিক কসরত। দৌড়তে দৌড়তে মাঝেমধ্যে ঝুঁকে পড়ার মধ্যে ক্যালোরি ব্যয় হয়। তেমনই আবার এই প্রক্রিয়ায় রাস্তা, পার্ক, মাঠও পরিষ্কারের কাজে সহযোগিতা করতে পারেন বাসিন্দারা। মূলত প্লাস্টিক-দূষণ রোধেই এমন ভাবনা বলে এনকেডিএ সূত্রের খবর।
এনকেডিএ-র একাংশ জানাচ্ছেন, দেশ-বিদেশে ফিটনেস ক্লাবগুলি ‘প্লগিং’-এর আয়োজন করছে। কলকাতাতেও প্লগিং নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে। যদিও এই বিষয়টি সম্পর্কে এখনও সেই ভাবে প্রচার শুরু হয়নি এ রাজ্যে। নিউ টাউনের এক বাসিন্দা সঞ্জয় সাউ জানান, খেলার আগে ওয়ার্ম-আপ করার সময়ে অনেকে দৌড়তে দৌড়তে ঝুঁকে পড়েন। এ ক্ষেত্রে শারীরিক কসরতের সঙ্গে দূষণ রোধের কাজ একই সঙ্গে হবে। এই ভাবনাটাই অভিনব। এনকেডিএ-র চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন জানান, পরিবেশ দূষণ রোধে শুধু প্রশাসন নয়, সকলকেই সজাগ হতে হবে। এটি তেমনই একটি প্রচেষ্টা।