ফাইল চিত্র
সাইবার অপরাধ দমনে থানা চালু হয়েছে আগেই। এ বার নাবালক এবং নাবালিকাদের সাইবার অপরাধের হাত থেকে বাঁচাতে বিশেষ শাখা তৈরি করছে কলকাতা পুলিশ। লালবাজার সূত্রের খবর, কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধানের অধীনেই এই দলটি কাজ করবে। তবে এই দলে ফরেন্সিক সুপারভাইজ়ার হিসাবে নিযুক্ত হয়েছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ পলাশবরণ মাইতি। রাজ্য ফরেন্সিক পরীক্ষাগারের সহ-অধিকর্তা পলাশবরণবাবু বর্তমানে কলকাতা পুলিশের ফরেন্সিক দলের প্রধান বিজ্ঞানীর পদেও রয়েছেন। গোয়েন্দা প্রধানের অধীনে থাকলেও দলের সহ-প্রধান হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে আইপিএস অফিসার বিদিশা কলিতাকে।
কলকাতা পুলিশের খবর, বিদিশা বর্তমানে ডিসি (এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ) পদে রয়েছেন। তবে লালবাজারের ডিসি (সাইবার) পদটি আপাতত শূন্য থাকায় বিদিশাকে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসাবে সেখানেও রাখা হয়েছে। পরবর্তী কালে সাইবার শাখায় স্থায়ী ডেপুটি কমিশনার এলে বিদিশাই এই নতুন দলের সহ-প্রধান হতে পারেন। নতুন এই দলে দু’ধরনের তদন্তের কাজ চলবে। একটি হল প্রোঅ্যাক্টিভ, অন্যটি রিঅ্যাক্টিভ। অর্থাৎ, একটি দল নিজেরাই অপরাধের হাল-হকিকত সন্ধান করে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তদন্ত করবে। দ্বিতীয় দলটি অপরাধের অভিযোগ এলে তদন্ত করবে। প্রোঅ্যাক্টিভ তদন্তকারীদের মাথায় থাকবেন গোয়েন্দা বিভাগের সহকারী কমিশনার (ক্রিমিনাল ইন্টেলিজেন্স) মহম্মদ নুরুল আবসার এবং রিঅ্যাক্টিভ তদন্তকারীদের মাথায় থাকবেন সহকারী কমিশনার (মহিলা ও শিশু সুরক্ষা) রিনা সরকার। এই দলে মহিলা এবং শিশু সুরক্ষা বিভাগ, সাইবার অপরাধ, ফরেন্সিক বিভাগ থেকে তদন্তকারী হিসাবে একাধিক অফিসারকে নিয়োগ করা হয়েছে।
লালবাজারের পুলিশ মহলের বক্তব্য, সাইবার জগৎকে কেন্দ্র করে যৌন নিগ্রহ, শিশু পাচার, অপহরণ, মাদক চক্র ইত্যাদি চলে। এমন অপরাধের ক্ষেত্রে নাবালক এবং নাবালিকাদের সহজে নিশানা করা হয়। ইদানীং জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরেও এই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে এবং এই ধরনের অপরাধ দমনের ক্ষেত্রে পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনীকে বিশেষ তৎপর হতেও বলা হয়েছে। সে কথা মাথায় রেখেই এই দল তৈরি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি জাতীয় অপরাধ রেকর্ড বুরোর যে তথ্য প্রকাশিত হয়েছে তাতে দেখা গিয়েছে, জাতীয় স্তরে শিশুদের বিরুদ্ধে অপরাধ বাড়ছে। পশ্চিমবঙ্গেও গত তিন বছরে শিশুদের বিরুদ্ধে অপরাধের হার বেড়েছে। যদিও পুলিশের একাংশের দাবি, শিশুদের বিরুদ্ধে অপরাধ আগের চেয়ে বেশি লিপিবদ্ধ হচ্ছে। তাই আপাতদৃষ্টিতে অপরাধ বেড়েছে বলে মনে হচ্ছে। তবে শিশুদের বিরুদ্ধে অপরাধকে হালকা ভাবে দেখতে রাজি নন লালবাজারের কর্তারা। সে কারণেই এই বিশেষ দল তৈরি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।