ফাইল চিত্র।
চিকিৎসক প্রেসক্রিপশনে দ্রুত অস্ত্রোপচার করাতে বলেছেন। কিন্তু কয়েক মাস হাসপাতালে ঘুরেও দিন ঠিক হয়নি। শেষে অস্ত্রোপচারের দিন নির্ধারিত হল আট-দশ মাস পরে। মেরুদণ্ডের সমস্যা নিয়ে দিনযাপন করেন জটিল স্নায়ুরোগে আক্রান্তেরা। এমনকি, নির্ধারিত দিনে হাসপাতালে গিয়েও অস্ত্রোপচার হয় না। অনেক ক্ষেত্রেই অভিযোগ ওঠে, শয্যা নেই। তাই অস্ত্রোপচারের নির্ধারিত দিন পিছোতে হবে। বারবার যাতায়াতের সামর্থ না থাকায় হাসপাতাল চত্বরেই রাত কাটান রোগী ও পরিজনেরা। রোগীর চাপে হিমশিম খাচ্ছে রাজ্যের একমাত্র স্নায়ু চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান। তাই পরিকাঠামো উন্নত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস (বিআইএন)-এ আগামী জানুয়ারি থেকেই চালু হবে আরও দু’টি অপারেশন থিয়েটার (ওটি), ছ’টি আইটিইউ এবং চল্লিশটি শয্যা। বিআইএনে এখন দু’টি ওটি রয়েছে। একসঙ্গে চার জনের অস্ত্রোপচার হয়। ছ’টি ইনটেনসিভ ট্রিটমেন্ট ইউনিট (আইটিইউ) রয়েছে। জানুয়ারি থেকে নতুন পরিষেবা চালু হলে ১২টি আইটিইউ থাকবে। একসঙ্গে আট জনের অস্ত্রোপচার করা যাবে। এর জেরে রোগীর অপেক্ষার দীর্ঘ লাইন কমবে বলেই আশা করছেন কর্তৃপক্ষ।
রাজ্যের অধিকাংশ হাসপাতালেই স্নায়ুরোগের চিকিৎসা করাতে রোগী ও পরিজনেরা হয়রান হন। অধিকাংশ জেলা স্তরের হাসপাতালে স্নায়ু শল্যবিদ নেই। অস্ত্রোপচারের জন্য জেলা থেকে অধিকাংশ রোগীকেই কলকাতায় রেফার করা হয়। যার জেরে চাপ বেড়ে যায় বিআইএনের উপরে। তাই অনেক সময়েই রোগীদের দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হয়। এমনকি, অস্ত্রোপচারের অপেক্ষায় হাসপাতাল চত্বরে দিন কাটানোর নজিরও রয়েছে।
স্বাস্থ্যকর্তারা জানান, জেলা থেকে রেফার হওয়া রোগীর চাপের পাশাপাশি বিআইএনে চাপ থাকে বেসরকারি হাসপাতালের রোগীদেরও। স্নায়ুর অস্ত্রোপচারের পরে নানা ঝুঁকি থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোগীকে দীর্ঘদিন হাসপাতালের ভেন্টিলেশন বা ইনটেনসিভ ট্রিটমেন্টে রাখতে হয়। অনেক ক্ষেত্রেই কয়েক মাস বেসরকারি হাসপাতালের আইটিইউ-তে রেখে চিকিৎসা চালানোর খরচ বহন করা সম্ভব হয় না। যার জেরে তাঁরা সরকারি হাসপাতালে আসেন। বেসরকারি হাসপাতালের রোগীদের আবেদনের ভিত্তিতে বিআইএন কর্তৃপক্ষ আলাদা নথি তৈরি রেখেছেন। তাই আইটিইউ বাড়লে রোগীদের সুবিধে হবে।
স্বাস্থ্য ভবনের এক কর্তা জানান, ডিসেম্বরের মধ্যেই বিআইএন-এর নতুন ভবন তৈরির কাজ শেষ করার নির্দেশ রয়েছে। ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকেই বিআইএন-এর নতুন ভবন রোগীর ব্যবহারে কাজে লাগবে বলেই আশা করা যায়। রোগীর চাপের অনুপাতে এই পরিকাঠামো যথেষ্ট নয়। তবে কিছুটা সমস্যা মেটাবে বলেই আশা করা যাচ্ছে।