অনেক আগেই জোকা কলকাতা পুরসভার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কিন্তু পরিকাঠামোর অভাব মেটেনি। ফলে পুর-পরিষেবা পেতে অসুবিধা হচ্ছে বাসিন্দাদের। এই অবস্থায় এলাকার নিকাশির সার্বিক উন্নতির জন্য পরিকল্পনা করেছিল পুরসভা। কিন্তু সমস্যা থেকে গিয়েছিল পানীয় জল সরবরাহের। সেই সমস্যা মেটাতে পুরকর্তৃপক্ষ জোকার কোম্পানিপুরে বুস্টার পাম্পিং স্টেশন তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
পুরসভার জল সরবরাহ দফতরের ডিরেক্টর জেনারেল বিভাস মাইতি বলেন, “জোকায় গঙ্গার পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহের জন্য বুস্টার পাম্পিং স্টেশন তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের সমীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে। এ বার কাজ শুরু হবে।”
কলকাতা পুরসভার এক আধিকারিক জানান, গঙ্গা থেকে জল তুলে তা পরিশ্রুত করে পানীয় জল সরবরাহ করার পরিকাঠামো কলকাতা পুরসভার নেই। এখন এই অঞ্চলে জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতরের পাম্পের মাধ্যমে পানীয় জল সরবরাহ
করা হয়। কিন্তু এই সরবরাহের পরিমাণ যথেষ্ট নয়। তাই পুরসভার পক্ষ থেকে চারটি গভীর নলকূপ তৈরি করা হয়েছে।
এখানেই প্রশ্ন ওঠে, শহরের বেশিরভাগ জায়গায় কলকাতা পুরসভা যেখানে গভীর নলকূপ খননের বিরোধী সেখানে নতুন করে এই ধরনের নলকূপ খনন করছে কেন? আর্সেনিক থাকার আশঙ্কাই বা কতটা? পুরকর্তৃপক্ষের বক্তব্য, কলকাতা পুরসভার যে সব অঞ্চলে গঙ্গার পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে, সেখানে গভীর নলকূপের জল তোলা হচ্ছে না। কিন্তু যেখানে তা সম্ভব হচ্ছে না, সেখানেই গভীর নলকূপের জল ব্যবহার করা হচ্ছে। এই সব জায়গায়ও গঙ্গার জল সরবরাহ শুরু হলে গভীর নলকূপের ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া হবে।
তা ছাড়া পুরসভার দাবি, যেখান থেকে জল তোলা হচ্ছে সেই সমস্ত জায়গায় আর্সেনিক আছে কি না তা পরীক্ষা করে তবেই নলকূপ খননের কাজ চলছে। পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন,“কলকাতার সব জায়গায় পানীয় জল সরবরাহ আমাদের পুরবোর্ডের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। তার জন্য বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে কলকাতা পুরসভা। এর মধ্যে জোকার পাম্পিং স্টেশনও রয়েছে। এই প্রকল্প শেষ হলে গার্ডেনরিচ থেকে আসা পরিস্রুত পানীয় জল এখানে সরবরাহ করা সম্ভব।”
পুরসভার জল সরবরাহ দফতর থেকে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যেই গার্ডেনরিচে প্রতি দিন পাঁচ কোটি গ্যালন জল উৎপাদন করার জন্য কাজ চলছে। এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে জোকায় পানীয় জল সরবরাহ করার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা থাকবে না। পুরকর্তৃপক্ষের দাবি, আগামী বছরেই এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।