জোকা-বিবাদী বাগ মেট্রোর জট কাটার আশ্বাস

কাটতে চলেছে জোকা-বিবাদী বাগ মেট্রো প্রকল্পের জট। গত ৬ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে মেট্রো কর্তৃপক্ষ ও রাজ্য পরিবহণ দফতরের কর্তাদের বৈঠকে ওই জট কাটার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে মেট্রো সূত্রের খবর।

Advertisement

অত্রি মিত্র

শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৫০
Share:

কাটতে চলেছে জোকা-বিবাদী বাগ মেট্রো প্রকল্পের জট। গত ৬ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে মেট্রো কর্তৃপক্ষ ও রাজ্য পরিবহণ দফতরের কর্তাদের বৈঠকে ওই জট কাটার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে মেট্রো সূত্রের খবর।

Advertisement

ওই দিনের বৈঠকে রাজ্যের পরিবহণ সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নারায়ণ স্বরূপ নিগমের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব মণীশ ঠাকুর। সেখানে ছিলেন কলকাতা মেট্রো রেলের কর্তারাও। ওই বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছ থেকে জোকা বিবাদী বাগ মেট্রো প্রকল্পের জন্য মোমিনপুর স্টেশনের জমি-জট এবং তিন মেট্রো প্রকল্পের জংশন স্টেশন এসপ্ল্যানেড তৈরির জটও কাটার আশ্বাস মিলেছে বলে দাবি মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের। এসপ্ল্যানেড স্টেশন তৈরির জন্য এবং ওই এলাকা থেকে ট্রামলাইন সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অস্থায়ী ভাবে মেট্রো কর্তৃপক্ষকে এবং পরিবহণ দফতরের হাতে আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই জমি তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে মেট্রো রেল সূত্রের খবর।

মেট্রো সূত্রের খবর, এসপ্ল্যানেড স্টেশন তৈরির জন্য যে জমি নেওয়া হবে, সম পরিমাণ জমি কাঁচরাপাড়া বা দমদমে রেলের জমি থেকে সেনাবাহিনীকে দেওয়া হবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

মেট্রো রেলের বক্তব্য, মোমিনপুর স্টেশন তৈরি না করা গেলে জোকা-বিবাদী বাগ মেট্রো প্রকল্পের ভবিষ্যৎই অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। প্রকল্পের সবিস্তার রিপোর্ট অনুযায়ী, মোমিনপুর স্টেশনের আগে ছিল মাঝেরহাট স্টেশন, পরে ভিক্টোরিয়া। প্রথমে মেট্রো মোমিনপুর স্টেশন বাদ দিয়েই প্রকল্পের নকশা তৈরি করার কথা ভেবেছিল। কিন্তু তাতে সুড়ঙ্গের মধ্যে দিয়ে অনেক পথ যাত্রীদের যেতে হবে, যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে দাবি মেট্রো-কর্তাদের। এই অবস্থায় মোমিনপুর স্টেশন তৈরির জন্য সেনাবাহিনীর অনুমতি না মেলায় প্রকল্পটিই প্রশ্নের মুখোমুখি পড়ে। এই অবস্থায়, মোমিনপুর স্টেশনের জন্য সেনাবাহিনীর প্রাথমিক অনুমতি মেলায় প্রকল্পের জট অনেকটাই কেটে গেল বলে মনে করছেন মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ।

বছরখানেক আগে সিদ্ধান্ত হয়েছে, জোকা মেট্রো প্রকল্প বিবাদী বাগের বদলে এসপ্ল্যানেডে শেষ হবে। এসপ্ল্যানেডেই জোকা মেট্রো ছাড়াও এক সঙ্গে মিশছে বর্তমান উত্তর-দক্ষিণ মেট্রো রুট এবং ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো। ফলে, তিনটি মেট্রো রুটের কেন্দ্রস্থল হিসেবে এসপ্ল্যানেডকেও তৈরি করার কথা ভাবা হচ্ছে। তা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার নকশা তৈরির কাজও শুরু করে দিয়েছে।

মেট্রো রেলের এক কর্তা বলেন, ‘‘এসপ্ল্যানেড স্টেশন কলকাতার সবচেয়ে বড় মেট্রো স্টেশন হতে চলেছে। ফলে, সেনাবাহিনীর অনুমতি মেলায় বড়সড় একটি জট কাটল বলেই মনে করা হচ্ছে।’’ পাশাপাশি ওই কর্তা বলেন, ‘‘কমান্ড হাসপাতালের যে জমিতে মোমিনপুর স্টেশন তৈরির ব্যাপারে সমস্যা হচ্ছিল, তা সেপ্টেম্বর শেষের মধ্যেই সমাধান করা হবে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ মেট্রো সূত্রের খবর, কমান্ড হাসপাতালের জমি থেকে জোকা-বিবাদী বাগ প্রকল্পের জন্য ৫০০ বর্গমিটার ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছে সেনাবাহিনী।

আজ, শুক্রবার কলকাতায় আসছেন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু। তার ঠিক আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এমন সিদ্ধান্ত যথেষ্ট ইতিবাচক বলেই মনে করছেন মেট্রো-কর্তারা। ওই কর্তার কথায়, ‘‘প্রথমে রেলমন্ত্রী কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকরকে একটি চিঠি লেখেন। পরে তাঁর সঙ্গে বৈঠকও করেন রেলমন্ত্রী। এর পরেই মেট্রো প্রকল্পগুলির জট কাটাতে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।’’ রেলমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বৈঠকের পরে সেনাবাহিনী এবং রেলওয়ে বিকাশ নিগম লিমিটেডের প্রতিনিধিরা মোমিনপুর স্টেশন কোথায় হবে, তা নিয়ে যৌথ সমীক্ষা চালায়। তার রিপোর্ট প্রতিরক্ষা মন্ত্রকে জমা পড়ে। তার ভিত্তিতেই আলাপনবাবুদের বৈঠকে জমি দিতে প্রাথমিক সম্মতি জানিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।

জট কাটার পথে বিবাদী বাগে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্প পথে সেন্ট অ্যান্ড্রুজ চার্চ নিয়ে তৈরি জটিলতাও। রাজ্য পরিবহণ দফতরের মধ্যস্থতায় বৃহস্পতিবার বৈঠক করেছেন সেন্ট অ্যান্ড্রুজ চার্চ কর্তৃপক্ষ। বৈঠকে মেট্রো কর্তৃপক্ষ প্রকল্পের কাজ চলার সময়ে চার্চের যাতে কোনও ক্ষতি না হয়, তা নিয়ে প্রয়োজনীয় সতর্কতা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এমনকী, কোনও ক্ষতি হলে তা মেরামত করার দায়িত্বও মেট্রো কর্তৃপক্ষ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement