বন্ধ রয়েছে টালি নালার উপরে নতুন সেতু। শুক্রবার। ছবি: সুদীপ ঘোষ
ঢাকঢোল পিটিয়ে উদ্বোধন করেছিলেন কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। কিন্তু চার দিন পেরিয়ে গেলেও শুরু হল না যান চলাচল। ফলে পুজোর সময়ে করুণাময়ী সেতুর উপর থেকে গাড়ির চাপ কমবে বলে আশা করা হলেও বাস্তবে তা ঘটল না। উল্টে সাধারণ মানুষকে সেই লম্বা গাড়ির জট ঠেলেই যাতায়াত করতে হচ্ছে।
আর এই গোটা পরিস্থিতির দায় নিয়েই এখন শুরু হয়েছে কলকাতা পুলিশ ও কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)-র চাপান-উতোর। কেএমডিএ-র দাবি, সেতু তৈরির কাজ শেষ করে ছোট গাড়ি চলাচলের মহড়াও দেওয়া হয়েছিল। এমনকি, উদ্বোধনের আগে পুলিশকেও গোটা উড়ালপুলটি ঘুরিয়ে দেখানো হয়। পুলিশ সম্মতি দেওয়ার পরেই উদ্বোধন করা হয়েছিল। এর পরেও কেন গাড়ি চলাচল শুরু হয়নি, তা পুলিশই জানে।
অন্য দিকে পুলিশের বক্তব্য, কেএমডিএ কোনও ছাড়পত্র দেয়নি। শুধু তা-ই নয়, সেতু তৈরি হয়ে গেলেও টালিনালার একাংশ বুজিয়ে যে রাস্তা তৈরি হচ্ছে, তার কাজ এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। বর্তমানে যে সরু রাস্তাটি রয়েছে, সেখান দিয়ে গাড়ি চালালে চাকা বসে যেতে পারে। তাতে বিপত্তি বাড়বে।
শহরের আরও বেশ কয়েকটি সেতুর মতো করুণাময়ী সেতুটিরও কখনও কোনও মেরামতি হয়নি। এমনকি, গত বছরে ওই সেতুর উপরে একটি ফাটলও দেখা গিয়েছিল। তখন সাময়িক ব্যবস্থা হিসেবে ফাটলের উপরে পিচ ঢেলে তার উপরে একটি প্লেট বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল কেএমডিএ-র তরফে। পরে সেতুটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে বিশেষজ্ঞেরা জানান, টালিনালার জলে ডুবে থাকার জন্য স্তম্ভগুলি সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সেতুর কোনও ক্ষতি হয়নি।
কিন্তু দিনের পর দিন ওই সেতুর উপরে গাড়ির চাপ বেড়ে চলায় তা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় কেএমডিএ। ঠিক হয়, করুণাময়ী সেতুর অদূরেই টালিনালার উপরে আর একটি সেতু তৈরি করা হবে। যাতে মুচিপাড়া, বেহালা বা শখেরবাজারমুখী গাড়ি ওই নতুন সেতুর উপর দিয়ে চলতে পারে। তাতে করুণাময়ী সেতুর উপর থেকে গাড়ির চাপও কমবে। সেই নতুন সেতু তৈরি হলেও চালু হল না পুজোর আগে। কেন? তা হলে কি তড়িঘড়ি করে লোক দেখানোর জন্যই উদ্বোধন করে দেওয়া হয়েছিল সেতুটির? এ বিষয়ে অবশ্য কেএমডিএ-র চেয়ারপার্সন অন্তরা আচার্যকে ফোন করা হলেও পাওয়া যায়নি। মেলেনি মেসেজের উত্তর।