নিকাশি-দাওয়াই

কাজে গাফিলতি পেলে হবে জরিমানা

পুরসভায় নিকাশি দফতরের কাজে সমন্বয় না থাকায় শহরে জল জমার প্রবণতা এক সময় বেড়ে গিয়েছিল বলে মনে করছে কলকাতা পুর প্রশাসন। এখন অবশ্য সেই প্রবণতা কমানো সম্ভব হয়েছে বলে দাবি তাঁদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৬ ০০:৪৪
Share:

পুরসভায় নিকাশি দফতরের কাজে সমন্বয় না থাকায় শহরে জল জমার প্রবণতা এক সময় বেড়ে গিয়েছিল বলে মনে করছে কলকাতা পুর প্রশাসন। এখন অবশ্য সেই প্রবণতা কমানো সম্ভব হয়েছে বলে দাবি তাঁদের। সোমবার পুরসভায় নিকাশি দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে এক বৈঠক করেন পুর কমিশনার খলিল আহমেদ। হাজির ছিলেন পুরসভার নিকাশি দফতরের মেয়র পারিষদ তারক সিংহ। অতীতে কেন শহরে এত জল জমত তা নিয়ে সেখানে আলোচনা হয়। কেন জমা জল বের হতে ২-৩ দিনেরও বেশি সময় লেগে যেত তা নিয়েও চুলচেরা বিশ্লেষণ হয়। তারক সিংহ জানান, শহরের পরিকাঠামো এমন যে, বেশি বৃষ্টি হলে জল জমবে এটা ঠিক। কিন্তু সেই জল বের হতে সময় বেশি লাগার কোনও কারণ ছিল না। গত এক বছর ধরে শহরের বেশ কিছু গালিপিট এবং নিকাশি নালা সাফ করে তেমনই ভরসা পেয়েছেন বলে করেন তিনি। আর তাতে ফল মেলায় এখন পুর প্রশাসন মনে করছে কাজ ঠিকঠাক ভাবে করা হলে অনেক আগেই শহরবাসীকে জমা জলের অস্বস্তিকর পরিবেশ থেকে রেহাই দেওয়া যেত।

Advertisement

২০১০-এ কলকাতার মেয়র হন শোভন চট্টোপাধ্যায়। তার দু’বছর পরে বর্ষার আগে তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন, বৃষ্টি বেশি হলে শহরের অন্য এলাকার মতো বেহালাও জমা জলে বেহাল হবে। আর তার মূল কারণ নিকাশির খারাপ হাল। সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, জমা জলেই কয়েকটি এলাকার বাসিন্দাদের থাকতে হবে। এ বার সেই জলছবি অনেকটা বদলানো গিয়েছে বলে
দাবি তারকবাবুদের।

কিন্তু কী ভাবে? পুরসভার এক ইঞ্জিনিয়ারের কথায়, ‘‘আগে নিকাশি নালা নামেই পরিষ্কার হতো। মাটির নীচ থেকে কতটা পলিমাটি, জঞ্জাল বার করা হয়েছে, তা কেউ জানার চেষ্টাও করত না। অথচ টন টন জঞ্জালের বহনের বিল পাশ হত।’’ খরচ হলেও কাজ কিছুই হতো না বলে দাবি পুরসভার একাংশের।

Advertisement

পুরকর্তাদের একাংশের মতে, দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী শহরবাসীর সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে এতটাই খোঁজ খবর নেন যে আধিকারিকেরা প্রতিনিয়ত নালা, জঞ্জাল, আলো এবং রাস্তার হাল ফেরাতে তৎপর থাকেন। গভীর রাতেও মেয়র, মেয়র পারিষদ এবং পুর কমিশনারকে তাই শহর ঘুরতে দেখা গিয়েছে। রাতে কাকের ডাক শুনে ব্যবস্থা নেওয়া থেকে এবং পার্কে অতিরিক্ত আলো জ্বালানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলরকে ধমকও দিয়েছেন মেয়র। দক্ষিণ কলকাতার এক রাস্তায় জঞ্জাল পরিষ্কার না হওয়ার জন্য মেয়রের বকাবকিতে এক কাউন্সিলরের চোখে জলও ঝরেছে। এ সবই আসলে মুখ্যমন্ত্রীর নজরে শহরের ‘কুশ্রী’ রূপ যাতে না ধরে পড়ে তারই প্রচেষ্টা।

এ দিন নিকাশি দফতরের বৈঠকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কোনও কাজ ফেলে রাখা যাবে না। তারকবাবু জানান, প্রত্যেক ইঞ্জিনিয়ার-অফিসারকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ফাইল ফেলে রাখলে তাঁকে কারণ দর্শাতে হবে। আর ঠিকাদার ঠিক সময়ে কাজ শেষ না করলে জরিমানা করা হবে।

পুর কর্তাদের ধারণা, গত এক বছরে শহর থেকে জমা জলের পরিমাণ কমানো এবং দ্রুত তা বের করা যে ভাবে সম্ভব হয়েছে তাতে এক সময় নিকাশি দফতরের কাজে যে খামতি ছিল তা পরিষ্কার। তাই এ বার থেকে তেমন হলে সংশ্লিষ্ট অফিসারদের কারণ দর্শানোর কথাও ভাবছে পুর প্রশাসন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement