জ্বলছে সেই নৌকো। মঙ্গলবার। — নিজস্ব চিত্র
ভারত-পাক সীমান্তে যখন উত্তেজনা তুঙ্গে, ঠিক তখনই বিস্ফোরণে ছাই হয়ে গেল নৌবাহিনীর একটি স্পিড বোট। মঙ্গলবার সকাল ছ’টা নাগাদ কলকাতার প্রিন্সেপ ঘাট সংলগ্ন ম্যান অব ওয়ার জেটিতে এই ঘটনার পরেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। পরে অবশ্য জানা যায়, বোটের জল বার করতে গিয়ে জ্বালানির ট্যাঙ্কে শর্ট সার্কিট হয়েই ঘটে বিস্ফোরণ, যাতে দু’জন আহত হন। নৌবাহিনী জানায়, পুড়ে যাওয়া স্পিড বোটটিও তাদের নিজস্ব নয়। ভাড়ায় নেওয়া হয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ এটিকে দুর্ঘটনা বললেও নাশকতার যোগাযোগও পুরোপুরি উড়িয়ে দিচ্ছে না তারা।
পুলিশ জানিয়েছে, নদীতে নজরদারি চালানোর জন্য মুম্বইয়ের একটি বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে দু’টি স্পিড বোট ভাড়া করেছিল নৌবাহিনী। প্রিন্সেপ ঘাটের কাছে ম্যান অব ওয়ার জেটি-তে ওই স্পিড বোট দু’টি বাঁধা ছিল। এ দিন সকালে ওই সংস্থার দুই কর্মী রবীন্দ্রনাথ শী এবং সুকান্ত মাইতি পাম্প চালিয়ে স্পিড বোটের ভিতরে থাকা জল বার করতে যান। তখনই বিস্ফোরণ ঘটে। এই ঘটনায় প্রাথমিক ভাবে নাশকতার কোনও প্রমাণ না মিললেও তা একেবারে নস্যাৎ করছে না কলকাতা পুলিশ। সে কারণেই রবীন্দ্রনাথবাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
পুলিশ তদন্তে জেনেছে, রবীন্দ্রনাথবাবু পাম্প চালানোর জন্য হাতলে টান দিতেই ওই বোটে থাকা পেট্রোলের ট্যাঙ্কে বিস্ফোরণ ঘটে। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, ওই ট্যাঙ্কে কোনও ভাবে শর্ট সার্কিট হয়েই এই বিপত্তি। ট্যাঙ্কের বিভিন্ন অংশ ছিটকে এসে রবীন্দ্রনাথবাবুর গায়ে লাগে। গোটা বোটেই আগুন লেগে যায়। সুকান্তবাবুও অগ্নিদগ্ধ হন। এর পরে পুলিশ এসে তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। রবীন্দ্রনাথবাবুকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হলেও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন সুকান্তবাবু।
নৌবাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, ঘটনার সময়ে তাঁদের এক জন কর্মী পাড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘বিস্ফোরণ হওয়ার পরে দড়ি ছিঁড়ে গিয়ে বোটটা ভেসে যেতে থাকে। খবর পেয়ে দমকল এসে প্রিন্সেপ ঘাটের অদূরে জ্বলন্ত বোটটিকে উদ্ধার করে আগুন নেভায়।’’ সেখানে থাকা এক নিরাপত্তারক্ষী বলেন, ‘‘সাতসকালে এই ঘটনায় প্রথমে আমরা চমকে যাই। পরে অবশ্য জানা যায়, এটি দুর্ঘটনা।’’