এ বার সরকারি প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল খোদ জাতীয় পরিবেশ আদালত। ফাইল ছবি।
গঙ্গাপাড়ের ভাঙন রোধে রাজ্য সরকারের প্রস্তাবিত প্রকল্প নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলেছিলেন পরিবেশকর্মীদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য ছিল, যে হারে পাড়ের ভাঙন গুরুতর আকার ধারণ করছে, সেই তুলনায় সরকারি তরফে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ করা হচ্ছে কি? এ বার সরকারি প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল খোদ জাতীয় পরিবেশ আদালতও। তবে প্রকল্পের যৌক্তিকতা নিয়ে নয়, বরং যে ভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে, সেই বয়ান নিয়ে।
হাওড়ার বটানিক্যাল গার্ডেন সংলগ্ন গঙ্গাপাড়ের ভাঙন সংক্রান্ত এক মামলায় রাজ্য সরকারের জমা দেওয়া প্রস্তাবিত প্রকল্প নিয়ে পরিবেশ আদালতের মন্তব্য, কাজ শুরুর ছ’মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প শেষ করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু প্রকল্প রূপায়ণের জন্য প্রশাসনিক ও আর্থিক অনুমোদন মিলেছে কি না, তা নিয়ে কিছু বলা হয়নি। সে কারণে বর্তমান হলফনামা বাতিল করে আগামী এক মাসের মধ্যে নতুন করে তা জমা দেওয়ার জন্য রাজ্যের সেচ ও জলপথ দফতরকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
যার পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশবিদ মহলে রীতিমতো অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। এক পরিবেশবিজ্ঞানী জানাচ্ছেন, ইচ্ছাকৃত ভাবে সরকারি তরফে প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রতা তৈরি করা হচ্ছে। ওই পরিবেশবিজ্ঞানীর বক্তব্য, ‘‘এমনিতেই পরিবেশ নিয়ে কারও কোনও হেলদোল নেই। সেখানে অবস্থান জানানোর ক্ষেত্রে যদি সরকারের তরফে স্বচ্ছতা বজায় রাখা না হয়, তা হলে মুশকিল।’’ মামলার আবেদনকারী সুভাষ দত্তের বক্তব্য, ‘‘হলফনামার আকারে প্রকল্প রিপোর্ট জমা দেওয়া হল, অথচ সেখানে প্রকল্পের অনুমোদন মিলেছে কি না, তা স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়নি! শুধুমাত্র দেরি করার জন্য এই সব করা হচ্ছে।’’ যদিও প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তার বক্তব্য, ‘‘জাতীয় পরিবেশ আদালতের সব নির্দেশ মেনে চলেছে সরকার। এ বারও নির্দেশ মতোই কাজ করা হবে।’’
প্রসঙ্গত, বটানিক্যাল গার্ডেন সংলগ্ন পাড়ের ভাঙন রোধের জন্য সেচ দফতর একটি নকশা তৈরি করে। চলতি মাসের শুরুতে হলফনামার আকারে বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট জমা দেওয়া হয় আদালতে। মামলার পরবর্তী শুনানি ৪ জুলাই।