—ফাইল চিত্র।
ফের রাজ্য সরকারকে মোটা অঙ্কের জরিমানা করল জাতীয় পরিবেশ আদালত। দূষণ রোধে ব্যর্থ হওয়ায় এর আগের বার যেখানে জরিমানার পরিমাণ ছিল পাঁচ কোটি টাকা। সেখানে এ বছর জরিমানা হয়েছে দশ কোটি টাকা। ফলে বায়ুদূষণ নিয়ে আবারও ‘মুখ পুড়ল’ রাজ্য সরকারের। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ওই টাকা কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদে জমা করার জন্য শুক্রবার রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
এ বার শুধু জরিমানা করেই থেমে যায়নি জাতীয় পরিবেশ আদালত। বায়ুদূষণ রোধে কেন রাজ্য সরকার ব্যর্থ হল, কেন তাদের নির্দেশকে মান্যতা দেওয়া হয়নি, তা ৪ নভেম্বর রাজ্যের মুখ্যসচিবকে ব্যক্তিগত ভাবে আদালতে হাজিরা দিয়ে জানানোর নির্দেশ দিয়েছে পরিবেশ আদালত। যাকে ‘উল্লেখযোগ্য’ পদক্ষেপ বলে মনে করছেন পরিবেশকর্মীদের একাংশ।
কলকাতা ও হাওড়ার বায়ুদূষণ রোধের জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ২০১৬ সালের ১১ অগস্ট বেশ কয়েকটি নির্দেশ দিয়েছিল জাতীয় পরিবেশ আদালত। কিন্তু সেই নির্দেশ ঠিক ভাবে পালন না করায় গত নভেম্বরেই রাজ্যকে পাঁচ কোটি টাকা জরিমানা করেছিল আদালত। তার পরেও যে রাজ্যের টনক নড়েনি, তা এ দিনের ঘটনাতেই স্পষ্ট বলে জানাচ্ছেন পরিবেশকর্মীদের একাংশ।
মামলার আবেদনকারী সুভাষ দত্ত জানান, বায়ুদূষণ রোধে রাজ্য সরকারের ভূমিকায় এ দিন রীতিমতো অসন্তোষ প্রকাশ করেছে আদালত। সুভাষবাবুর কথায়, ‘‘বায়ুদূষণের উৎস কী, তা জানতে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে সমীক্ষা করতে বলেছিল জাতীয় পরিবেশ আদালত। সে ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য কাজই হয়নি বলে উষ্মা প্রকাশ করেছে পরিবেশ আদালত। বায়ুদূষণ রোধে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রেও রাজ্য সরকারের দীর্ঘসূত্রিতা এবং কাজ না করার মানসিকতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে আদালত।’’
পরিবেশকর্মীদের একাংশের বক্তব্য, কলকাতা ও হাওড়ায় যে ভাবে দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তা রীতিমতো উদ্বেগজনক। গরমকালে দূষণের মাত্রা সে ভাবে বোঝা না গেলেও একটু ঠান্ডা পড়তেই পুরো পরিস্থিতিই বদলে যায়। যানবাহনের ধোঁয়ার দূষণ তো রয়েছেই, সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে নির্মাণস্থলের দূষণ, জ্বালানির দূষণ-সহ আরও অনেক বিষয়। এক পরিবেশকর্মীর কথায়, ‘‘দূষণ রোধে এখনও মাস্টার প্ল্যানই করে উঠতে পারল না রাজ্য সরকার! এটা নিঃসন্দেহে বড় ব্যর্থতা।’’