ফাইল চিত্র।
পরিবেশবান্ধব জ্বালানি (কম্প্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস বা সিএনজি) আনার জন্য পাইপলাইন বসানোর কাজ কত দূর এগিয়েছে, তা উল্লেখ করে রাজ্যকে হলফনামা জমা দিতে বলল জাতীয় পরিবেশ আদালত। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে ওই হলফনামা জমা দিতে হবে বলে সোমবার আদালত নির্দেশ দিয়েছে।
নির্দেশে বলা হয়েছে, জেলাভিত্তিক পাইপলাইন বসানোর কাজের অগ্রগতি, প্রকল্প শেষ করতে কত কাজ বাকি রয়েছে, তা সম্পূর্ণ করতে কত দিন সময় লাগবে, সেই সম্পর্কে রাজ্য সরকারকে বিস্তারিত ভাবে জানাতে হবে। বিশেষ করে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, হুগলি, হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুর, নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনায় সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের কী হাল, তা বলতে হবে। শুধু তা-ই নয়, শহরে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি আনার ক্ষেত্রে যে সমস্ত কাজ এখনও শুরুই হয়নি, সেই সমস্ত কাজের ক্ষেত্রে কী কী সম্ভাব্য প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, সেই সব সমাধানের পথই বা কী, তা-ও হলফনামায় জানাতে হবে। পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে আগামী ২০ অগস্ট।
সংশ্লিষ্ট মামলার আবেদনকারী সুভাষ দত্ত জানাচ্ছেন, সিএনজি প্রকল্প নিয়ে এ দিন জাতীয় পরিবেশ আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় রাজ্যকে। বিচারপতি অমিত স্থালেকর ও বিশেষজ্ঞ সদস্য শৈবাল দাশগুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ কেন পরিবেশবান্ধব জ্বালানি আনতে এত দেরি হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। সুভাষবাবুর কথায়, ‘‘অন্য সমস্ত রাজ্যে সিএনজি এলেও পশ্চিমবঙ্গে এখনও তা হয়নি। এ নিয়ে প্রশ্ন তোলে পরিবেশ আদালত।’’ এমনিতে দীর্ঘদিন ধরে কলকাতা-সহ রাজ্যে পাইপলাইনের মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি আনা নিয়ে টালবাহানা চলছে। এ বিষয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা গেল (ইন্ডিয়া) লিমিটেড গত অক্টোবরে পরিবেশ আদালতের কাছে হলফনামা দিয়ে জানিয়েছিল, পাইপলাইন বসানোর জন্য জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন। আর সেটা রাজ্য সরকারের কাজ। কিন্তু একাধিক বার এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া সত্ত্বেও রাজ্যের তরফে সদর্থক কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি।
অথচ তথ্য বলছে, দেশের বিভিন্ন শহরে সিএনজি আনার জন্য ২০০৭ সালে ‘গেল’ পাঁচটি প্রকল্প গ্রহণ করেছিল। বাকি প্রকল্পগুলি পুরোদস্তুর চালু হয়ে গেলেও এই রাজ্যের ক্ষেত্রে সেই কাজ ক্রমশ পিছোতে থাকে। এ দিকে বায়ুদূষণের মাত্রা বাড়লেও তার পরিপ্রেক্ষিতে কেন সিএনজি আনতে দেরি হচ্ছে, তা নিয়ে জাতীয়
পরিবেশ আদালত দফায় দফায় জানতে চায় রাজ্য ও ‘গেল’-এর কাছে। কিন্তু তার পরেও কাজ এগোয়নি। যদিও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার দাবিকে অস্বীকার করে রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, সিএনজি আনার জন্য জেলাভিত্তিক ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ জমা দিলেই বোঝা যাবে, এ বিষয়ে কতটা সক্রিয় প্রশাসন। জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় সে ব্যাপারে সতর্ক পদক্ষেপ করছে রাজ্য।