প্রতীকী ছবি।
একনাগাড়ে কেঁদে চলেছিল একরত্তি শিশুটি। কান্না শুনেই দোতলা থেকে ছুটে আসেন বাড়িওয়ালি। শিশুটির কাছে যেতেই চমকে যান তিনি। দেখেন, বিছানার নীচে মেঝের উপরে উপুড় হয়ে পড়ে রয়েছেন তার মা। মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বেরোচ্ছে। মহিলার চিৎকারে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। শিশুটির মাকে বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে নিউ আলিপুর থানা এলাকার এস এন রায় রোডের ঘোষপাড়ায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম শ্রাবণী সর্দার (২১)।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, বাড়িতে বৈদ্যুতিক তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে ওই মহিলার। পুলিশ জানিয়েছে, শ্রাবণী তাঁর স্বামী ও এক বছরের ছেলেকে নিয়ে ওই বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। স্বামী রমাপদ সর্দার একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রমাপদরা দিন আটেক আগেই ওই বাড়িতে আসেন। দোতলায় থাকেন বাড়িওয়ালা। নীচের তলায় একটি ঘরে ভাড়া থাকেন রমাপদরা। উল্টো দিকের ঘরে সপরিবার ভাড়া থাকেন সোমা চক্রবর্তী নামে এক জন।
এ দিন বিকেলে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, শ্রাবণীদের ঘরে তালা ঝুলছে। উল্টো দিকের বাসিন্দা সোমা বলেন, ‘‘দিনকয়েক আগেই ওঁরা ঘর ভাড়া নিয়ে এখানে আসেন। ফলে ততটা আলাপ ছিল না। বাড়িওয়ালার স্ত্রীর চিৎকার শুনে ওঁদের ঘরে গিয়ে দেখি, মহিলা মেঝেয় পড়ে রয়েছেন। মুখ গিয়ে গ্যাঁজলা বেরোচ্ছিল।’’ সোমা জানান, ওই সময়ে শ্রাবণীর স্বামী ঘরে ছিলেন না। এর পরে বাড়িওয়ালার স্ত্রী স্থানীয়দের ডেকে অ্যাপ-ক্যাব বুক করে মহিলাকে হাসপাতালে পাঠান। তখনও মহিলার হুঁশ ছিল না। দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পরে শিশুটিকে তার আত্মীয়স্বজনেরা নিয়ে গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
এ দিকে, খবর পেয়ে নিউ আলিপুর থানার পুলিশ ওই ঘরে গিয়ে পরীক্ষা করে দেখে, ঘটনার সময়ে শ্রাবণী সম্ভবত ইন্ডাকশন কুকারে রান্না করছিলেন। তদন্তকারীরা জানান, ইন্ডাকশন কুকারটি যে বৈদ্যুতিক তারের সঙ্গে যুক্ত ছিল, তাতে কোনও ত্রুটি থাকতে পারে। সেই তার থেকেই সম্ভবত বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই মহিলার। লালবাজারের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এই ঘটনায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট এলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।’’ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।