—প্রতীকী চিত্র।
শুধুই পারিবারিক বিবাদ, না কি পিছনে রয়েছে সিন্ডিকেটের ঝামেলা? বেহালায় ভাইয়ের হাতে দাদার আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় রহস্য দানা বেঁধেছে। দাদার প্রতি ভাইয়ের আক্রোশের পিছনে প্রাথমিক ভাবে পারিবারিক বিবাদ রয়েছে বলে জানানো হলেও পিছন থেকে কারও ‘উস্কে’ দেওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না এলাকার পুরপ্রতিনিধি থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা।
রবিবার দুপুরে বেহালার চড়কতলায় বাড়ির সামনেই দাদা প্রলয় রায়ের উপরে ছুরি নিয়ে চড়াও হন ভাই প্রণয় রায়। দাদার বুকে পর পর কোপ বসিয়ে দেন তিনি। এর পরে প্রলয়কে মাটিতে ফেলে ইট দিয়ে তাঁর মাথায় একের পর এক আঘাত করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। সঙ্কটজনক অবস্থায় বেহালার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেখানেই প্রলয় চিকিৎসাধীন। অস্ত্রোপচার হলেও এখনও তাঁর সঙ্কট কাটেনি। অভিযুক্ত প্রণয়কে গ্রেফতার করেছে বেহালা থানার পুলিশ। তবে, কেন তিনি দাদার উপরে হামলা করলেন, সেটাই এখন ভাবাচ্ছে পুলিশকে।
পুলিশের দাবি, হামলার পিছনে রয়েছে পারিবারিক বিবাদ। যদিও স্থানীয়দের সন্দেহ, প্রণয়কে হামলা চালাতে কেউ প্ররোচিত করেছে। এর পিছনে সিন্ডিকেট নিয়ে বিবাদও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁরা। তাঁরা জানান, চড়কতলায় সিন্ডিকেটের অন্যতম মাথা প্রলয়। গত কয়েক বছরে এলাকায় তাঁর প্রভাব বেড়েছে। তিনি স্থানীয় পুরপ্রতিনিধির ঘনিষ্ঠ বলেও খবর। ফলে, এলাকার অন্য সিন্ডিকেটের মাথাদের ‘নজরে’ ছিলেন তিনি। বছর দেড়েক আগে চড়কতলায় একটি মেলাকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল এলাকা। তাতেও নাম জড়িয়েছিল প্রলয়ের। স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘এলাকায় একাধিক সিন্ডিকেটের আলাদা আলাদা গোষ্ঠী রয়েছে। তাই প্রলয়ের কোনও শত্রু নেই, এমনটা নয়।’’
জানা গিয়েছে, মাস ছয়েক আগে ভাইকেও সিন্ডিকেটের ব্যবসায় নামাতে চেয়েছিলেন প্রলয়। কিন্তু সেই ব্যবসায় নামা হয়নি প্রণয়ের। ইদানীং চড়কতলা মোড়ে বাবার বন্ধ থাকা দোকান খুলতে চাইছিলেন তিনি। তা নিয়েও দুই ভাইয়ের বিবাদ চলছিল। ১২১ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি রূপক গঙ্গোপাধ্যায় প্রলয়ের সিন্ডিকেটের ব্যবসায় যুক্ত থাকার কথা স্বীকার করে নেন। তিনি বলেন, ‘‘ও সিন্ডিকেটের ব্যবসায় যুক্ত থাকলেও ছেলে ভাল। তবে, পিছন থেকে ভাইকে উস্কে দিয়ে কেউ কিছু করাল কি না, জানি না।’’
এ দিকে, হাসপাতালে ভর্তির পরে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও প্রলয়ের শারীরিক সঙ্কট এখনও কাটেনি বলেই জানা গিয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। তদন্তকারী এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘অভিযুক্ত ভাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পারিবারিক বিবাদ, না কি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে, তা জানতে আপাতত ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’’