ফাইল চিত্র।
২১ জুলাই ইদুজ্জোহা। এই বিশেষ দিনটাকে কোরবানি বা বকরিদ-ও বলা হয়ে থাকে। অতিমারির জন্য গত বছর থেকে করোনা-বিধি মেনেই ইদ এবং ইদুজ্জোহার নমাজ পড়েছেন সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ মুসলিম। অগস্ট নাগাদ করোনার তৃতীয় ঢেউ আসতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। তাই রাজ্যের মুসলিম ধর্মগুরু থেকে বুদ্ধিজীবীদের আবেদন, এ বারও ইদুজ্জোহার নমাজ বিধি মেনেই পড়তে হবে। ভিড় করলে চলবে না।
গত বছর থেকেই রেড রোডে ইদ ও ইদুজ্জোহার নমাজ স্থগিত রয়েছে। রেড রোডে ইদের নমাজের ইমাম ফজলুর রহমান বলেন, ‘‘করোনার কথা ভেবে এ বারও ইদুজ্জোহার নমাজ রেড রোডে হবে না। রাজ্যের মুসলিম সমাজের কাছে আবেদন, এ বারও বাড়িতে বসে নমাজ পড়ুন। মসজিদে গেলে অবশ্যই মাস্ক পরে, দূরত্ব-বিধি মেনে নমাজ পড়তে হবে। তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে। তাই বয়স্ক এবং শিশুরা বাড়িতেই নমাজ পড়ুন।’’ ফুরফুরা দরবার শরিফের মুখ্য নির্দেশক ত্বহা সিদ্দিকীর আবেদন, ‘‘করোনা এখনও বিদায় নেয়নি। ইদুজ্জোহার দিনে ভিড় করলে দেশ ও দশের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে, ভিড় না করে বকরিদের নমাজ আদায় করুন। সম্প্রীতি বজায় রাখুন।’’
চলতি বছরে ইদে নাখোদা মসজিদে করোনা-বিধি না মানার অভিযোগ উঠেছিল। অনেকেই মাস্ক ছাড়া ভিড় করেছিলেন। তার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, তার জন্য ইদুজ্জোহার দিনে সতর্কতা অবলম্বন করছে মসজিদ কমিটি। নাখোদার ট্রাস্টি নাসের ইব্রাহিমের কথায়, ‘‘রোজ নমাজের সময়ে ইমাম সাহেব মাস্ক পরে আসতে সকলকে অনুরোধ করছেন। ইদুজ্জোহার নমাজেও মাস্ক পরতে বলা হয়েছে। বকরিদের নমাজও ইদের মতো দু’টি জামাতে হবে। প্রথমটি সকাল সাড়ে ছ’টায়, দ্বিতীয়টি সকাল সাড়ে আটটায়। সবার কাছে অনুরোধ, দ্বিতীয় নমাজের জন্য কেউ যেন বাড়ি থেকে সকাল সাড়ে সাতটার আগে না বেরোন।’’ নাসের জানান, ইদে দ্বিতীয় নমাজ পড়ার জন্য বেশির ভাগ মানুষ প্রথম নমাজ শেষ না হতেই মসজিদের সামনে জড়ো হয়েছিলেন। সাধারণত, নমাজের পরে নমাজিদের বেরোতে ১৫ মিনিট সময় লাগে। ইদুজ্জোহায় দ্বিতীয় নমাজের জন্য সকাল ৭টার পরে বাড়ি থেকে বেরোলে ভিড় হবে না।
ধর্মতলা ও টালিগঞ্জের টিপু সুলতান মসজিদের তরফে শাহিদ আলম জানিয়েছেন, ভিড় কমাতে এই দুই মসজিদেও ইদুজ্জোহার দু’টি নমাজ হবে। সবাইকে মাস্ক পরে আসতে বলা হয়েছে। মসজিদে ঢোকার মুখে স্যানিটাইজ়ার রাখা থাকবে।
বাড়িতে নমাজ পড়ার আবেদন করেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক ইতিহাস বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান ওসমান গনিও। তাঁর কথায়, ‘‘আমি ছেলেকে নিয়ে বাড়িতেই ইদ ও ইদুজ্জোহার নমাজ পড়েছি। ২১ জুলাইও বাড়িতেই নমাজ পড়ব। এখন ভিড় করা মানেই নিজেদের বিপদ ডেকে আনা।’’ আইনজীবী এক্রামুল বারির পর্যবেক্ষণ, ‘‘মহামারির সময়ে মসজিদ বা ময়দানে নমাজ পড়া অনুচিত। দেশকে বাঁচাতে করোনা-বিধি মানতে হবে। মুসলিমদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ এক বছরের বেশি সময় ধরে নিয়ম মেনে চলছেন। আশা করি, বকরিদের দিনও তা-ই করবেন।’’