রুদ্ধ: এ ভাবেই আটকে রয়েছে প্রকল্পের কাজ। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
টাকার অভাবে আটকে কাজ। আবেদন করা হয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে। ‘খেলো ইন্ডিয়া’ প্রকল্প থেকে পাঁচ কোটি টাকা দেওয়ার আশ্বাসও মেলে। কিন্তু শর্ত, বাকি টাকা দিতে হবে উদ্যোগীদের। সেই চিঠি পৌঁছেছে কলকাতা পুরসভায়। তবু ওই টাকা নেওয়ার ব্যাপারে ‘নীরব’ পুর প্রশাসন। অনেকের মতে, কেন্দ্রের ‘বিমাতৃসুলভ’ আচরণে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই কি কেন্দ্রের সহায়তায় অনীহা? যদিও তেমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘পাঁচ কোটি টাকা যে কেন্দ্র দেবে বলেছে, এমন কোনও খবর আমার জানা নেই।’’
একাধিক পুর অফিসার জানান, কিছু কাল আগে মুখ্যসচিবকে এক নির্দেশে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁর অনুমোদন ছাড়া দিল্লির সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে না। বাংলার কোনও অফিসারকে দিল্লি যেতে হলে নবান্নের অনুমতি লাগবে। জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের ডাকে সম্প্রতি দিল্লিতে অনুষ্ঠিত মশা নিবারণী বিষয়ক সেমিনারে পুরসভা প্রতিনিধি না পাঠানোয় সেই ধারণা আরও মজবুত হয়েছে। সেমিনারে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ-সহ প্রতিটি রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরকেও। কিন্তু স্বাস্থ্য দফতরেরও কেউ সেখানে যাননি। পরিস্থিতি বুঝেই হয়তো এ ক্ষেত্রে টাকা নিতে সাহস করছেন না পুরকর্তারা।
পুরসভার পার্ক ও উদ্যান দফতরের মতে, কেন্দ্রের শর্ত হল, তারা পাঁচ কোটি টাকা দেবে তখনই, যখন বাকি ‘ম্যাচিং মানি’ দেবে পুরসভা বা রাজ্য। ‘ম্যাচিং মানি’ নিয়ে সমস্যা হওয়ায় কেন্দ্রের টাকা নিতে পারছে না পুর প্রশাসন।
পুরসভা সূত্রে খবর, উত্তর কলকাতার দেশবন্ধু পার্কে একাধিক সাঁতারের পুল তৈরি হচ্ছে। ওই কাজের দায়িত্বে আছে পুরসভার পার্ক ও উদ্যান দফতর। ইতিমধ্যে প্রায় ছ’কোটি টাকা খরচ হয়েছে। একটি বড় সাঁতারের পুল ছাড়াও বাচ্চাদের সাঁতার শেখার জন্য তিনটি এবং একটি ক্লাবে পুলের কাজ প্রায় শেষ। ডাইভিং পুল ও ওয়ার্ম আপ পুলও হওয়ার কথা। কাজ সম্পন্ন করতে আরও ১৩ কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে। আর্থিক সাহায্য চেয়ে বছর খানেক আগে কেন্দ্রীয় যুবকল্যাণ এবং ক্রীড়া দফতরে আবেদন পাঠানো হয়। এতে উদ্যোগী হয়েছিলেন স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে। ওই দফতর মাস কয়েক আগে পুর কমিশনারকে চিঠিতে জানায়, ‘খেলো ইন্ডিয়া’ প্রকল্প থেকে পাঁচ কোটি টাকা দেওয়া হবে। তবে বাকি টাকা দিতে হবে পুরসভাকে। প্রথমে টাকা পেয়ে ‘উৎফুল্ল’ হলেও পরে সবটা জেনে নীরব থাকাই শ্রেয় মনে করছে পুর প্রশাসন। আর তাই অর্ধেক হয়ে পড়ে আছে ওই প্রকল্প।