‘বাংলার নবজাগরণ ৩.০’
বাঙালিদের পূর্বপুরুষেরা হলেন ধনী বণিক চাঁদ সওদাগর বা জগত শেঠ, আর সেই জাতির রক্তেই কি না ব্যবসা নেই? এ কথা কি বিশ্বাসযোগ্য? বছর খানেক আগে এই কথার কিছুটা সত্যতা থাকলেও এখন তা সর্বান্তকরণে ভুল প্রমাণিত হয়েছে। কথাতেই আছে ‘বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মী’। তাই বাংলার মাটিকে লক্ষ্মীমন্ত করে তুলতে প্রথাগত ধারণার বাইরে গিয়ে এখন বাঙালিরাও ব্যবসামুখী। বাঙালিদের ব্যবসামুখী করে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করেছে বঙ্গীয় বাণিজ্য পরিষদ বা ‘বেঙ্গল বিজ়নেস কাউন্সিল’।
‘বেঙ্গল বিজ়নেস কাউন্সিল’ বা বঙ্গীয় বাণিজ্য পরিষদ সংগঠনটি তৈরি হয় ২০২১ সালে। বর্তমানে এই সংগঠনটির সদস্য সংখ্যা চারশো ছাড়িয়েছে এবং ক্রমাগত এই সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য হল ব্যবসা সংক্রান্ত কিছু ভুল ধারণা ও ভীতি কাটিয়ে বাঙালিদের ব্যবসার প্রতি আগ্রহকে বাড়িয়ে তোলা। যা কর্মসংস্থান, জীবিকা, সংস্কৃতির উন্নয়নের পাশাপাশি সমগ্র সমাজের বিকাশে সুস্থ ও ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে সক্ষম হবে।
এই বঙ্গীয় বাণিজ্য পরিষদ বা ‘বেঙ্গল বিজ়নেস কাউন্সিল’-এর উদ্যোগে করুণাময়ী সেন্ট্রাল পার্কে (বইমেলা প্রাঙ্গণ) ২০ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে ‘বাংলার নবজাগরণ ৩.০’। চলবে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত। বাংলার সকল ঐতিহ্যকে একসঙ্গে একই জায়গায় নিয়ে আসতে পাঁচদিনের এই অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে ‘বেঙ্গল বিজ়নেস কাউন্সিল’। বিগত বছরেও দারুণ সাফল্য পেয়েছিল ‘বেঙ্গল বিজ়নেস কাউন্সিল’ আয়োজিত ‘বাংলার নবজাগরণ ২.০’।
বাঙালিদের ব্যবসার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধির পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদেরও এই মিলনমেলায় স্বাগত জানানো হয়েছে। যাতে সকলের একত্রিত প্রচেষ্টা ব্যবসার জগতে বাঙালিদের এক অন্য জায়গায় পৌঁছে দিতে পারে। পাঁচদিনের এই জমজমাট অনুষ্ঠানে ব্যবসায়িক আলাপচারিতা ছাড়াও সাধারণ মানুষদের জন্যে থাকছে নানা ধরনের বিনোদনের ব্যবস্থাও।
‘বেঙ্গল বিজ়নেস কাউন্সিল’-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং সাধারণ সম্পাদক শুভাশিস দত্ত আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন, “বাঙালিকে বলা হয় কাঁকড়ার জাত। এই বদ্ধমূল ধারণাকে মিথ্যে প্রমাণ করতে ‘বাংলার নবজাগরণ ৩.০’-এর আয়োজন করা হয়েছে। গতবারের মতো এ বছরেও ‘হোম বিজ়নেস’কে উৎসাহিত করার জন্য একটা কনটেস্ট করা হয়েছিল। যেখানে আবেদন পড়েছিল তিন হাজারেরও বেশি। এ বছর মোট ২৫ থেকে ৩০টি কোম্পানি থাকছে এই ‘ট্রেড ফেয়ার’-এ। এ ছাড়াও থাকবে রান্নার প্রতিযোগিতা, ‘কিডস্ ফান জ়োন’, ‘ফাইন্যান্স জ়োন’ ইত্যাদি। মূল আকর্ষণের মধ্যে থাকছে ‘ফ্রি মার্কেট হ্যান্ডিক্র্যাফটস্’, যেখানে একশোরও বেশি স্টল থাকবে। থাকছে ‘বেঙ্গল বিজ়নেস কাউন্সিল’-এর সদস্যদের নিয়ে আয়োজিত ফ্যাশন শোও। বিগত বছরের এ বছরেও কিংবদন্তি ব্যবসায়ীদের সম্মাননা প্রদানও করা হবে। সব মিলিয়ে খুবই জমজমাট অনুষ্ঠান হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।”
এই মিলনমেলায় থাকছে রান্নার প্রতিযোগিতা, বাংলা শব্দের বিভিন্ন মজার খেলা নিয়ে থাকছে সঞ্চালক প্রাক্তন রেডিয়ো জকি রয়। এ ছাড়াও বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে ২০ নভেম্বর থাকছে জনপ্রিয় বাংলা ব্যান্ড চন্দ্রবিন্দু এবং ২২ নভেম্বর বাংলা রক ব্যান্ড ফসিল্স। পাশাপাশি এই নামজাদা ব্যান্ডের সঙ্গে থাকবেন অন্যান্য শিল্পীরাও। এই অনুষ্ঠানের সাক্ষী থাকতে চাইলে ২০-২৪ নভেম্বরের মধ্যে যে কোনও দিন আপনিও পৌঁছে যেতে পারেন ‘বেঙ্গল বিজ়নেস কাউন্সিল’ আয়োজিত ‘বাংলার নবজাগরণ ৩.০’-তে। প্রবেশ অবাধ।
‘বাংলার নবজাগরণ ৩.০’-এর ডিজিটাল মিডিয়া পার্টনার আনন্দবাজার অনলাইন।