পুকুরটাই যেন ‘ডেঙ্গি জ়োন’, বলছে পুরসভা

এক দিন দুপুরে ওই পুকুরটির সামনে গিয়ে দেখা গেল, পুকুরে গাড়ি ধোয়া আটকাতে বোর্ড লাগিয়েছেন পুর প্রতিনিধি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৮ ০৩:২৪
Share:

সামনেই পুরসভার গাড়ি না ধোয়ার নিষেধাজ্ঞা। নিজস্ব চিত্র

সবে দাপট দেখাতে শুরু করেছে বর্ষা। এর মধ্যেই ‘ডেঙ্গির ভূত’ দেখছেন কলকাতা পুরসভার একাধিক ওয়ার্ডের কাউন্সিলরেরা। অবস্থা এমনই যে, বর্ষার শুরুতে একটি পুকুরকে‌ ‘ডেঙ্গি জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করে দিলেন পুর প্রতিনিধিরা। বরোর বৈঠকে দ্রুত ওই পুকুর সংস্কারে ১০ দফা পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

বুধবার কলকাতা পুরসভার ১০ নম্বর বরোর বৈঠক ছিল। সূত্রের খবর, সেখানে ডেঙ্গি মোকাবিলার প্রসঙ্গ উঠতেই নিজের ৯১ নম্বর ওয়ার্ডে কমলা পার্কের পুকুর নিয়ে আলোচনা শুরু করেন সিপিএম কাউন্সিলর অন্নপূর্ণা দাস। তাঁর দাবি, এলাকার মানুষদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, সেখানে স্নানও করা হয়, অ্যাম্বুল্যান্স এমনকি গাড়িও ধোয়া হয়। অন্নপূর্ণাদেবীর কথায় নড়ে বসেন বাকি পুর প্রতিনিধিরাও।

এক দিন দুপুরে ওই পুকুরটির সামনে গিয়ে দেখা গেল, পুকুরে গাড়ি ধোয়া আটকাতে বোর্ড লাগিয়েছেন পুর প্রতিনিধি। কিন্তু এই উদ্যোগ কতটা সফল হবে? বরো চেয়ারম্যান তপন দাশগুপ্তের আশ্বাস, ‘‘পুকুর এবং এলাকায় আগামী শনিবার থেকে কাজ শুরু হবে। সমস্যা মিটতে বাধ্য।’’ গত বর্ষাতেই ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা গিয়েছিল ৯১ নম্বর ওয়ার্ডে। এ বছর যাতে তার পুনরাবৃত্তি না হয়, তার জন্যই সচেতনতা বলে দাবি বরো চেয়ারম্যানের। এলাকার ডেঙ্গি তথ্য পুরসভা প্রকাশ্যে না আনলেও কাউন্সিলর বলেন, ‘‘গত বার আমার ওয়ার্ডে ৩০-৩৫ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছিলেন। এলাকার কমলা পার্ক পুকুরের অবস্থা ভয়ানক। ওটাই ডেঙ্গি মশার আঁতুড়ঘর।’’

Advertisement

সম্প্রতি ওই পুকুরেই ডুবে মৃত্যু হয়েছিল এক বৃদ্ধার। তিনি নিজেই জলে নেমেছিলেন নাকি পুকুরের সিঁড়ির শ্যাওলায় পা পিছলে পড়ে গিয়েছিলেন, পুলিশ তা নিশ্চিত ভাবে বলতে পারেনি। অন্নপূর্ণাদেবীর দাবি, তিনি কাউন্সিলর হওয়ার পরে পুকুর সংস্কার করে চারদিক বাঁধিয়ে দিয়েছেন। রতন হালদার নামে এক বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘ওখানে লোকে স্নানও করেন, আবার গাড়িও স্নান করান। কতটা অস্বাস্থ্যকর ভাবুন!’’ গত বার কমলা পার্ক পুকুরের জলে ডেঙ্গি মশার লার্ভা মিলেছিল বলে আরেক বাসিন্দার দাবি। খবর পেয়ে পুরকর্মীরা লার্ভা মারতে আসেন। ব্যস, ওই পর্যন্তই। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, এক বছরের মধ্যে পুকুর ফিরে গিয়েছে পুরনো চেহারায়।

প্রশ্ন উঠছে, এলাকায় বেশ কয়েকটি পুকুর থাকা সত্ত্বেও একটিকেই কেন ‘ডেঙ্গি জোন’ চিহ্নিত করা হল? তপনবাবুর বক্তব্য, ‘‘সার্বিক ভাবেই ডেঙ্গি নিয়ে আমরা সচেতন। যেখানে প্রয়োজন বেশি, সেখানে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement